Tumling

পাহাড়ি ঘুমজড়ানো সুন্দরী টুমলিং

অখ্যাত এই গ্রামই এখন পর্যটকদের কাছে লোভনীয় গন্তব্যটুমলিংয়ের পরিচিতির মূল কান্ডারি, এ গাঁয়েরই এক সাধারণ নেপালি মহিলা, নীলা গুরুং। ষাটোর্ধ্ব নীলাদেবীর উদ্যোগেই গত ২৮ বছর ধরে টুমলিংকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে পর্যটন, যা ওখানকার মানুষকে দিয়েছে জীবিকার বিকল্প পথ।

Advertisement

কৌশিক মুখোপাধ্যায়  

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:৪৬
Share:

সুদূর: টুমলিং থেকে দেখা যায় এমনই সব দৃশ্য

হিমালয়ের কোলে বাংলার উত্তর প্রান্তের প্রায় শেষ বিন্দু সান্দাকফু যাওয়ার পথে অপার সৌন্দর্যের ডালি নিয়ে অবস্থান ছোট্ট জনপদ টুমলিংয়ের। অনেকে ভাবতেন টোংলু আর টুমলিং একই গ্রাম। পরে আপন সৌন্দর্যের গরিমায় পর্যটনের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে পূর্ব নেপালের ইলাম জেলার পাহাড়ি গ্রাম টুমলিং।

Advertisement

টুমলিংয়ের পরিচিতির মূল কান্ডারি, এ গাঁয়েরই এক সাধারণ নেপালি মহিলা, নীলা গুরুং। ষাটোর্ধ্ব নীলাদেবীর উদ্যোগেই গত ২৮ বছর ধরে টুমলিংকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে পর্যটন, যা ওখানকার মানুষকে দিয়েছে জীবিকার বিকল্প পথ। তাঁরই অনুপ্রেরণায় ওই অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি পরিবারে গড়ে উঠেছে আধুনিক হোমস্টে। প্রথমে শুধু ট্রেকাররা এলেও ধীরে ধীরে সাধারণ পর্যটকেরাও আসতে লাগলেন। অবাক হয়ে গেলাম প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামেও অপ্রচলিত শক্তির উৎস রূপে সোলার বিদ্যুতের ব্যবহার দেখে।

লজ থেকে সামনে তাকালেই নীচে রডোডেনড্রনের বাগান। আর দিগন্ত বিস্তৃত উপত্যকায় রাতের আঁধারে তারার মতো জ্বলে থাকা নেপালি জনপদগুলোয় যেন এক অদ্ভুত কোমল প্রশান্তি মিশে রয়েছে। আর লজ থেকে কয়েক পা উপরে উঠলেই রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে দু’চোখ ভরে দেখতে হয় প্রসারিত কাঞ্চনজঙ্ঘার অসীম, অপরূপ সৌন্দর্যকে। এ-ও এক সীমান্ত, যেখানে যুদ্ধ-বোমা-গুলি বাদ দিন, ভিসা-পাসপোর্টের কাগুজে বাধাও নেই। সীমান্ত পারের শান্তিতে প্রত্যক্ষ করলাম, পড়ন্ত বিকেলের সূর্যের আভায় কাঞ্চনজঙ্ঘার শায়িত বুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ অবয়ব। সঙ্গে বাড়তি পাওনা একই ফ্রেমে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট। বিকেলের পড়ে আসা আলোয় কাঞ্চনজঙ্ঘা হতে এভারেস্ট ছুঁয়ে রাতের আঁধার নীচের জঙ্গলে ঘনিয়ে আসছিল। ঠিক সেই মুহূর্তেই ক্যামেরায় ধরা পড়ল লম্বা লেজওয়ালা ইয়েলো-বাইল্ড ব্লু ম্যাগপাই। এক দিকে পুব আকাশের দিকে উড়তে উড়তে মিলিয়ে যাচ্ছে ম্যাগপাই, অন্য দিকে কাঞ্চনজঙ্ঘার বরফচূড়ায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত জমছে। ঠান্ডা বাতাসের শিরশিরানি মেখে গরম পকোড়া আর ধোঁয়া ওঠা চায়ের টানে পাড়ি দিলাম লজের দিকে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন