5 Weird Museum

কেশ থেকে কন্ডোম, শৌচালয়ের জিনিসপত্র নিয়ে সংগ্রহশালা! কোথায় আছে এমন ঠিকানা?

শিল্প, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নয়, এমন সব জিনিসের সংগ্রহশালা রয়েছে সমগ্র বিশ্বের নানা প্রান্তে যা অবাক করার মতো। কী রয়েছে সেই সব মিউজ়িয়ামে?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ১১:১৭
Share:

বিশ্বজুড়ে রয়েছে এমন সংগ্রহশালা, যার সংগ্রহ বেশ অন্যরকম। কী রয়েছে সেই সংগ্রহে? ছবি: সংগৃহীত।

কোনও না কোনও সংগ্রহশালায় গিয়েছেন নিশ্চয়ই। কী দেখেছেন? প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, বিভিন্ন জনজাতির মডেল, খুব পুরনো কোনও প্রাণীর কঙ্কাল? কোনও সংগ্রশালায় থাকে প্রবালের সংগ্রহ, কোথাও আবার পুতুল। কোথাও আবার মহাকাশের খুঁটিনাটি। কিন্তু তা বলে মহিলাদের চুলই কোনও মিউজ়িয়ামের প্রদর্শনের বিষয়বস্তু, তেমনটা কি শুনেছেন আগে? বিশ্ব জুড়ে এমন অনেক মিউজ়িয়াম রয়েছে যেখানকার সংগ্রহের জিনিসপত্র বেশ অদ্ভুত বলে মনে হতে পারে। কোথায় রয়েছে সেই সব ঠিকানা? সংশ্লিষ্ট স্থানগুলিতে ভ্রমণে গেলে ঘুরে দেখতে পারেন এই সংগ্রহশালাগুলি।

Advertisement

ছবি: সংগৃহীত।

চুলের সংগ্রহশালা, তুরস্ক: প্রকৃতি, সংস্কৃতি, খাবার— সব মিলিয়ে এই দেশের আকর্ষণ কম নয়। ক্রমশই পর্যটন মানচিত্রে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তুরস্ক। এই দেশের রাজধানী আঙ্কারা। আঙ্কারার পাশাপাশি ইস্তানবুল, ইজ়মির, ক্যাপাডেসিয়া-সহ বহু জায়গাতেই পর্যটনের প্রসার হচ্ছে। এই দেশে ভ্রমণের ভাবনা থাকলে ঘুরে নিতে পারেন চুলের সংগ্রহশালা। সেন্ট্রাল অ্যানাতোলিয়ার অ্যাভানোস নামক শহরে তার অবস্থান। সেখানে গেলে হাজার হাজার মহিলার চুলের কাটা অংশ দেখতে পাবেন। ১৯৭৯ সালে মিউজ়িয়ামটি খোলা হয়। সেখানে ১৬ হাজারেরও বেশি মহিলার চুলের অংশ দেওয়ালে কাগজের সঙ্গে আটকে রাখা হয়েছে। কাগজে থাকে মহিলাদের নাম, পরিচয়। বিশ্বের অনেক মহিলাই স্বেচ্ছায় এখানে চুল দিয়ে যান।

এ নিয়ে এক গল্প লোকমুখে প্রচলিত। আসলে এটি ছিল একটি মাটির বাসনের দোকান। মৃৎশিল্পী চেজ় গ্যালিপকে তাঁর বান্ধবী সেই স্থান ছেড়ে চিরদিনের মতো চলে যাওয়ার আগে স্মৃতি হিসাবে চুলের টুকরো দিয়ে গিয়েছিলেন। সেই গল্পই লোকমুখে ছড়ায়। তার পর অন্য মহিলারাও চুল দিতে উৎসাহী হন। তা থেকেই মিউজ়িয়াম তৈরি হয় বলে জানা যায়। ১৯৯৮ সালে ‘গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’-এও স্থান পায় এই মিউজ়িয়াম। এই মিউজ়িয়াম ‘চেজ় গ্যালিপের’ মিউজ়িয়াম নামেও খ্যাত।

Advertisement

কন্ডোমের সংগ্রহশালা, তাইল্যান্ড

যৌন সুরক্ষা নিয়ে সচেতনতায় ব্যাংককে তৈরি হয়েছে কন্ডোমের মিউজ়িয়াম। ছবি: সংগৃহীত।

এখনও অনেকে প্রকাশ্যে কন্ডোম কিনতে লজ্জা বোধ করেন। অত্যন্ত সন্তর্পণে লুকিয়ে রাখেন জিনিসটি। অথচ সেই কন্ডোম দিয়েই সংগ্রহশালা তৈরি হয়েছে তাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে। ‘যৌন পর্যটন’-এর শীর্ষতালিকায় থাকা শহরের মধ্যে একটি হল ব্যাঙ্কক। দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক আসেন এ দেশে। যৌন সংসর্গ থেকে যাতে অসুখ না ছড়ায়, তা নিয়ে সচেতনতার বার্তা দিতেই এমন সংগ্রহশালা। বিভিন্ন সংস্থার বিভিন্ন সময়ে তৈরি রকমারি কন্ডোম প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে এখানে। পুরনো থেকে আধুনিক কন্ডোমের বিভিন্ন ধরনও চোখে পড়বে সেখানে। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদের কন্ডোমও রয়েছে সংগ্রহশালায়।

শৌচাগার সংগ্রহশালা, নয়াদিল্লি

নয়াদিল্লিতে রয়েছে শৌচাগার নিয়ে সংগ্রহশালা। দিল্লি বেড়াতে গেলে তালিকায় রাখতে পারেন এই স্থান। ছবি: সংগৃহীত।

গাড়ু হাতে মাঠেঘাটে মলত্যাগ করার প্রবণতা এখনও সম্পূর্ণ বন্ধ হয়নি এ দেশে। এ জন্য স্বচ্ছ ভারত মিশনও চালানো হয়েছে। জন সচেতনতায় তৈরি হয়েছে ‘টয়লেট এক প্রেম কথা’র মতো সিনেমা। কিন্তু এই দেশের রাজধানীতেই যে শৌচাগার নিয়ে সংগ্রহশালা রয়েছে, তা জানেন কি? নয়াদিল্লির পালাম-ডাবরি মার্গে মহাবীর এনক্লেভে সুলভ ভবনে রয়েছে তার ঠিকানা।

বিভিন্ন রকম কমোড, সময়ের সঙ্গে তার বিবর্তনের ছবি উঠে এসেছে সংগ্রহশালায়। শুধু ভারত নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অতীতে কোন ধরনের কমোড শৌচের জন্য ব্যবহার হত, তার ছবি, মডেল দেখতে পাবেন নয়াদিল্লির ‘টয়লেট মিউজ়িয়াম’-এ এলে। এক এক দেশের কমোডের নকশাও অবাক করার মতো। এমন কমোডও আছে, যা টেবিল বলে ভ্রম হতে পারে।

গণিতের সংগ্রহশালা, আমেরিকা

মিউজ়িয়াম জুড়ে অঙ্কের ধাঁধা, মজা। ম্যানহাটনে রয়েছে এমন মিউজ়িয়াম। ছবি:সংগৃহীত।

নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন এক বিখ্যাত শহর। টাইমস স্কোয়্যার দেখতে অনেকেই মিডটাউন ম্যানহাটনে যান। এই শহরে গেলে ঘুরে নিতে পারেন গণিতের মিউজ়িয়াম। ম্যানহাটনের ২২৫ ফিফ্থ অ্যাভিনিউতে রয়েছে এমন এক সংগ্রহশালা, যার বিষয়বস্তু অঙ্ক। বিভিন্ন রকম মডেল, প্রদর্শনীর মাধ্যমে গণিতের প্রতি ছোট থেকে বড় সকলের উৎসাহ বৃদ্ধির ভাবনার প্রতিফলন চোখে পড়বে সেখানে। এই সংগ্রহশালার বিভিন্ন মডেল এমন ভাবে তৈরি, যা যে কোনও বয়সিদের আকৃষ্ট করবে। গণিত এখানে ভয় নয়, বরং মজার ছলে শিখে নেওয়ার বিষয়।

ট্যাটু সংগ্রহশালা, জাপান

জাপানের বহু পুরনো ট্যাটু শিল্পের নিদর্শন রয়েছে মিউজ়িয়ামে। ছবি: সংগৃহীত।

ট্যাটুর সংস্কৃতি বিশ্বের বহু দেশেই বেশ প্রাচীন। জাপানও ব্যতিক্রম নয়। জাপানের ইয়োকোহামায় ট্যাটু সংগ্রহশালায় বিভিন্ন সময়ে শরীরে বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা ট্যাটু শোভা পেয়েছে। এখানে রয়েছে মৃত মানুষের শরীর থেকে কেটে নেওয়া চামড়াসমেত ট্যাটু। সেই চামড়াগুলি সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। জাপানিদের কাছে ট্যাটু শুধু ছবি নয়, বরং চিকিৎসা বিজ্ঞানের অংশ হিসাবে গণ্য হয়েছে। ট্যাটুর বিবর্তনের ইতিহাস চাক্ষুষ করা যায় এখানে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement