Bizarre

পঞ্চম শ্রেণিতে স্কুলছুট, ৩১ বছরে কোমায়, হাত ও পায়ের একটি করে আঙুল নাড়িয়ে ‘স্মার্ট ফার্ম’ গড়ে ফেললেন পঙ্গু তরুণ!

ভেন্টিলেটরে থাকা অবস্থাতেই একটি হাতের আঙুল এবং একটি পায়ের আঙুল দিয়ে ভার্চুয়াল কিবোর্ড ব্যবহার করতেন লি। তাই দিয়েই একটি সম্পূর্ণ স্মার্ট কৃষিখামার তৈরি করে ফেলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:৩৭
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

সর্বাঙ্গ অসাড়। নড়াচড়ার ক্ষমতাটুকুও নেই বললেই চলে। কেবল হাতের একটি এবং একটি পায়ের আঙুল নাড়াতে পারেন ৩৬ বছর বয়সি এই তরুণ। পক্ষাঘাতগ্রস্ত এবং ভেন্টিলেটরের উপর নির্ভরশীল হওয়া সত্ত্বেও, একটি স্মার্ট ফার্ম কন্ট্রোল সিস্টেম তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন চিনা তরুণ। বিছানায় শুয়ে শুয়ে আস্ত একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে ফেলেছেন তিনি।

Advertisement

সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে ৩৬ বছর বয়সি লি জ়িয়া দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের চংকিং এলাকার বাসিন্দা। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে মাসকুলার ডিস্ট্রফি (পেশির দূর্বলতার জিনগত রোগ) ধরা পড়ে তাঁর। অসুস্থতার কারণে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয় লি-কে। স্কুল ছেড়ে দেওয়ার পরেও তিনি পড়াশোনা বন্ধ করেননি। বাড়িতে নিজের চেষ্টায় পড়া চালিয়ে যান। পদার্থবিদ্যা এবং কম্পিউটারের প্রতি বিশেষ ঝোঁক ছিল লি-এর। ২৫ বছর বয়সে তিনি অনলাইন ফোরামের মাধ্যমে প্রোগ্রামিং শিখতে শুরু করেন।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লি-এর অবস্থার আরও অবনতি ঘটতে থাকে। প্রথমে তিনি হাঁটার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। ধীরে ধীরে, তাঁর খাওয়া এবং শ্বাস নিতে অসুবিধা হতে শুরু করে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তিনি কেবল একটি হাতের আঙুল এবং একটি পায়ের আঙুল নাড়াতে পারতেন। আরও বড় ঘটনা ঘটে ২০২০ সালে। লি কোমায় চলে যান। চিকিৎসকেরা তাঁর পরিবারকে জানান যে লি-এর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। চিকিৎসকেরা ভেন্টিলেটরের সাহায্যে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখেন। ২০২১ নাগাদ একটু সুস্থ হতেই মাটিবিহীন কৃষিকাজ সম্পর্কে পড়াশোনা শুরু করেন লি। আধুনিক চাষবাষের সঙ্গে প্রযুক্তিকে মিলিয়ে দিয়ে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেন।

Advertisement

ভেন্টিলেটরে থাকা অবস্থাতেই একটি হাতের আঙুল এবং একটি পায়ের আঙুল দিয়ে একটি ভার্চুয়াল কি-বোর্ড ব্যবহার করে একটি সম্পূর্ণ ‘স্মার্ট ফার্ম’ তৈরি করে ফেলেন। ২০১৭ সালে লিয়ের বাবা-মা আলাদা হয়ে যান। লিয়ের মা, উ ডিমেই তাঁর দেখাশোনার দায়িত্ব নেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উ নিজেও প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে ওঠেন। ছেলের জন্য সোল্ডারিং কন্ট্রোল বোর্ড, নেটওয়ার্ক অয়্যারিং ইনস্টল, সার্কিট প্রভৃতি প্রযুক্তিতে পারদর্শী হয়ে ওঠেন তিনিও।

ছেলের নির্দেশ মতো একটি রিমোটচালিত যানও তৈরি করে ফেলেছেন উ। লি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন যে, তাঁর মা এখন জানেন কী ভাবে যন্ত্রের তারগুলি সংযুক্ত করতে হয়। সমস্ত সিস্টেম সঠিক ভাবে সেট আপ করতে হয় তাও এখন মায়ের নখদর্পণে। লিয়ের ‘স্মার্ট ফার্ম’টি সফল ভাবে চলছে এবং ধীরে ধীরে লাভের মুখ দেখছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement