অবশেষে শিয়ালদহ মেন লাইনের যাত্রীদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়তে চলেছে। এই লাইনে ক্রমশ ভিড় বাড়তে দেখে বছর দশেক আগে থেকেই রেল কর্তারা ১২ কামরার ট্রেনের কথা বলে আসছিলেন। এতদিনে পরিকাঠামো তৈরির কাজ অনেকটাই শেষ হয়েছে। এ বার ১২ কামরার ট্রেন শুরুর অপেক্ষা। রেল কর্তারা জানিয়েছেন, এ বছর মার্চের শেষ সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকটি ট্রেনকে ১২ কামরা করা হচ্ছে। বাকিগুলি আগামী পুজোর সময় করে দেওয়া হবে।
গত কয়েক বছর ধরে শিয়ালদহের যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে। রেলের হিসেবে শিয়ালদহ দক্ষিণ ও উত্তরের তিন শাখা (মেন, বনগাঁ ও ডানকুনি) মিলিয়ে যাত্রী সংখ্যা ১৮ লক্ষেরও বেশি। ওই বিপুল ভিড় সামাল দিতে সারা দিনে কমবেশি সাড়ে ৮৯৩টি লোকাল ট্রেন চালানো হয়। রেল সূত্রের খবর, তার মধ্যে যাত্রী সংখ্যা বেশি বাড়ছে মেন লাইনে। উত্তরে চালানো হয় কমবেশি ৫৯৩টি লোকাল ট্রেন। কিন্তু যে হারে ভিড় বেড়েছে তাতে এখন ট্রেনের কামরায় পা রাখাই দায়। তার মধ্যে অনিয়মিত ট্রেন চলাচল। এই দুইয়ে মিলে যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ছিল। এই অবস্থায় ট্রেনের যাত্রীদের ঠিকঠাক পরিষেবা দিতে ৯ কামরার বদলে ১২ কামরার ট্রেন চালানো হবে বলে জানিয়েছিলেন রেল কর্তারা। কিন্তু দশ বছরেও ওই কাজ শেষ করা যায়নি। এ বার সেটাই করা হচ্ছে।
কিন্তু কামরা বাড়াতে গেলে প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্যও বাড়াতে হয়। আর বিপত্তি সেখানেই। বেশির ভাগ প্ল্যাটফর্মের জায়গা দখল হয়ে থাকায় প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য বাড়ানো যাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত দখলকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের সরানো গিয়েছে। তার পরে দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে এখন সিগন্যাল বসানোর কাজ চলছে।
রেল কর্তারা জানিয়েছেন, একই কারণে শিয়ালদহের তিনটি প্ল্যাটর্ফমেরও দৈর্ঘ্য বাড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। দুই, তিন ও চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে ওই কাজ চলছে। এই সব কাজ শেষ হলেই মেন লাইনে সব ট্রেনই ১২ কামরা করে দেওয়া হবে জানিয়েছেন রেল কর্তারা। এখন শিয়ালদহ উত্তরে মোট ১১২টি ১২ কামরার ট্রেন চলছে। আর দক্ষিণে চলছে মোট ২৯৬টি।