সিবিআই নিল না, ১৪ দিন জেল হাজতে শ্রীকান্ত মোহতা

বৃহস্পতিবার নাটকীয় ভাবে গ্রেফতার করলেও শুক্রবার শ্রীভেঙ্কটেশ ফিল্মসের কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতাকে হেফাজতে নিতে চাইল না সিবিআই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:২০
Share:

সিজিও থেকে বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শ্রীকান্তকে। নিজস্ব চিত্র

বৃহস্পতিবার নাটকীয় ভাবে গ্রেফতার করলেও শুক্রবার শ্রীভেঙ্কটেশ ফিল্মসের কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতাকে হেফাজতে নিতে চাইল না সিবিআই। এ দিন ভুবনেশ্বরের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে শ্রীকান্তকে তোলা হলে সিবিআই জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রেফতারের পরে তাঁকে জেরা করে বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ মিলেছে। তাতে তারা সন্তুষ্ট। সিবিআইয়ের এক শীর্ষকর্তা পরে জানান, একাধিক বার সমন জারির পরেও শ্রীকান্ত হাজির হচ্ছিলেন না। সেই কারণেই তাঁকে তুলে এনে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই মুহূর্তে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই। শ্রীকান্তকে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

Advertisement

শ্রীকান্তের শারীরিক অবস্থার কথা বলে তাঁর জামিনের আবেদন করেন আইনজীবীরা। আগামী মঙ্গলবার সেই আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা। তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে রাখার আবেদন অবশ্য খারিজ করে দেন বিচারক। সূত্রের খবর, শ্রীকান্তকে আপাতত ভুবনেশ্বরের জেল হাসপাতালে রাখা হতে পারে।

শ্রীকান্তকে তড়িঘড়ি গ্রেফতার করার পরেও সিবিআই তাঁকে নিজেদের হেফাজতে না-চাওয়ায় বিভিন্ন মহলে অবশ্য বিস্ময় তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, রোজ ভ্যালির টাকায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি কেনা হয়েছে বলে সিবিআই যে দাবি করেছে, তা ঘিরেও। সূত্রের মতে, রোজ ভ্যালি গোষ্ঠীর টিভি চ্যানেলে সিরিয়াল ও সিনেমা দেখানোর ব্যাপারে শ্রীকান্তের সঙ্গে গৌতম কুণ্ডুর ২৪ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল ২০১০ সালে। আর ২০১১ সালে ১২ লক্ষ টাকা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা খানছয়েক ছবি কিনেছিলেন শ্রীকান্ত। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, মাঝের সময়টুকুতে তিনি যে কোনও রোজগার করেননি এমন তো নয়। তা হলে রোজ ভ্যালির টাকাতেই যে ছবি কেনা হয়েছিল, সে ব্যাপারে সিবিআই নিশ্চিত হচ্ছে কী করে?

Advertisement

সিবিআই সূত্র বলছে, চার দিনের মধ্যে ব্যাঙ্ক লেনদেন সহ বেশ কিছু নথি চাওয়া হয়েছে শ্রীকান্তের কাছ থেকে। সেই নথি দেখে যদি মনে হয় যে জেরা করা প্রয়োজন, তখন তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হবে। পাশাপাশি, সিবিআই এ দিন আদালতে জানিয়েছে, গৌতমের কাছ থেকে কয়েক দফায় টাকা নেন শ্রীকান্ত। তার মধ্যে এক বার ৬ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা নেওয়ার পরেই

তিনি ছবি কেনেন। সংস্থার আইনজীবীরা আদালতে আরও বলেন, শ্রীকান্তের বিরুদ্ধে একটি অতি গোপন, গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ হাতে এসেছে। কেস ডায়েরিতে তার উল্লেখ করা রয়েছে। বিচারক চাইলে সেটি পড়ে নিতে পারেন।

সিবিআই সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার কসবার অফিস থেকে গাড়িতে সিজিও কমপ্লেক্সে আসার সময়ে মুখ খোলেননি শ্রীকান্ত। বিকেলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। শুরু হয় ম্যারাথন জেরা। রাত

সাড়ে আটটার পরে তাঁকে নিরামিষ খাবার দেওয়া হয়। রাতে তাঁর পরিবারের তরফেও খাবার ও

ওষুধ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বাড়ির খাবার ফেরত পাঠানো হয়। রাতে ইলেট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশ লকআপে রাখা হয় শ্রীকান্তকে। শুক্রবার সকালে তাঁকে প্রথমে

সিজিও কমপ্লেক্সে ও পরে বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বিমানে ভুবনেশ্বর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন