শিক্ষক দিবস

পার্থের রোষে ২ শিক্ষাকর্তার দায়িত্বে কোপ

স্কুলশিক্ষা দফতরের ওয়েবসাইট থেকে শিক্ষক দিবসে স্কুলে স্কুলে বাধ্যতামূলক ভাবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শোনানোর নির্দেশ সংবলিত চিঠি মঙ্গলবারেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই ওয়েবসাইটে চিঠিটি দেওয়ার ঘটনায় বুধবার সরিয়ে দেওয়া হল ভারপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষা কমিশনার সমীর ভট্টাচার্যকে। সেই সঙ্গে স্কুলশিক্ষা দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা মহম্মদ মহসিনকেও অন্যত্র বদলি করা হয়েছে একই কারণে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৪
Share:

স্কুলশিক্ষা দফতরের ওয়েবসাইট থেকে শিক্ষক দিবসে স্কুলে স্কুলে বাধ্যতামূলক ভাবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শোনানোর নির্দেশ সংবলিত চিঠি মঙ্গলবারেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই ওয়েবসাইটে চিঠিটি দেওয়ার ঘটনায় বুধবার সরিয়ে দেওয়া হল ভারপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষা কমিশনার সমীর ভট্টাচার্যকে। সেই সঙ্গে স্কুলশিক্ষা দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা মহম্মদ মহসিনকেও অন্যত্র বদলি করা হয়েছে একই কারণে।

Advertisement

কেন্দ্রের ওই চিঠি কেন রাজ্যের সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছিল, তার কারণ (‘শো-কজ’) ব্যাখ্যা করার জন্য ওই দুই আধিকারিককে চিঠিও দেওয়া হয়েছে বলে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুধবার জানান। স্কুলশিক্ষা দফতরের আরও আট আধিকারিককে এ দিন বদলি করা হয়েছে। তবে এগুলি সবই রুটিন-বদলি বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শিক্ষক দিবসে যে-বক্তৃতা দেবেন, তা দেশের সব স্কুলে টেলিভিশন বা রেডিওর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের বাধ্যতামূলক ভাবে শোনাতে হবে বলে নির্দেশ দিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের স্কুলশিক্ষা সচিবদের কাছে চিঠি পাঠায় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। কেন্দ্র কী ভাবে এমন ফতোয়া জারি করল, তা নিয়ে বিতর্ক বাধে শিক্ষামহলে। এ দিন পর্যন্ত সেই বিতর্কের নিরসন হয়নি।

Advertisement

রাজ্য আগেই ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা কেন্দ্রের এই নির্দেশ মানতে আগ্রহী নয়। পার্থবাবু মঙ্গলবার আর ইঙ্গিতের দিকে যাননি। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, কেন্দ্রের এই নির্দেশ রাজ্য মানবে না। সরকারি স্তরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্ত্বেও মঙ্গলবার স্কুলশিক্ষা দফতরের ওয়েবসাইটে কেন্দ্রের ওই নির্দেশিকা আপলোড করে সব স্কুলে বাধ্যতামূলক ভাবে তা মানার নির্দেশ দেন সমীরবাবু ও মহম্মদ মহসিন। তার জেরে শিক্ষামন্ত্রীর কোপে পড়েন ওই দুই শিক্ষা আধিকারিক। ওই দিনই সন্ধ্যায় অবশ্য ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নির্দেশিকাটি নেওয়া হয়।

স্কুলশিক্ষা দফতরের সচিব অর্ণব রায় বুধবার ওই দুই আধিকারিকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে জানতে চান, রাজ্য সরকারের নীতি না-জেনে কেন্দ্রের ওই নির্দেশিকা ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে কেন? সমীরবাবু আপাতত ওই দফতরের যুগ্মসচিব। তিনি ওই পদেই কর্মরত ছিলেন, সঙ্গে স্কুলশিক্ষা কমিশনারের অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। কিন্তু এ দিন সেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সমীরবাবুকে। আর মহম্মদ মহসিন পেয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষার যুগ্ম অধিকর্তার দায়িত্ব।

স্কুলশিক্ষা দফতরের একটি সূত্রের খবর, এক শীর্ষ কর্তার নির্দেশেই সমীরবাবুরা কেন্দ্রের নির্দেশিকাটি ওয়েবসাইটে আপলোড করেন। সেই কর্তাকে বাদ দিয়ে এই দুই আধিকারিক শাস্তির মুখে পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে স্কুলশিক্ষা দফতরের অন্দরে। পার্থবাবু এ দিন বলেন, “দু’জন আধিকারিক তো লিখিত ভাবে জবাব দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তাঁরা জানান, বিষয়টা কী। তার পরে সব দিক দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।”

মন্ত্রীর কোপে পড়া দুই আধিকারিক এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। সমীরবাবু বলেন, “সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলার এক্তিয়ার আমার নেই।”

আর মহম্মদ মহসিনের সাফ কথা, “আমি কিছু জানি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন