ধৃতেরা। নিজস্ব চিত্র
আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির জন্য জড়ো করা হয়েছিল মালপত্র। বাড়ির উঠোনে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল সেগুলি। কিন্তু গ্রামের ওই বাড়িতে বহিরাগতদের আনাগোনা দেখে সন্দেহ দানা বাঁধে গ্রামবাসীর। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
গ্রামে পুলিশ দেখে শুক্রবারই বাড়ির মালিক ও তাঁর স্ত্রী চম্পট দেয়। পুলিশের সন্দেহ আরও বাড়তে থাকে। এরপরেই শনিবার রাতে ওই মালপত্র নিয়ে পালাতে গেলে পুলিশ হাতে নাতে ধরে ফেলে তাদের।
অশোকনগরের শ্রীকৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতের মাটিয়াগাছা গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাতে দশজন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে একটি ছোট গাড়ি। ধৃতদের নাম, বিকাশ সিংহ, গোপাল ঠাকুর, রামসুমার প্রজাপতি, রমেন দাস, মহম্মদ পাপ্পু, প্রদীপ পাণ্ডে, রামু বিশ্বকর্মা, অজয় সিংহ, দীপচান্দ বর্মা, চন্দ্রেশ যাদব। তাদের বাড়ি কলকাতা ও উত্তরপ্রদেশে। ওই বাড়ি থেকে পুলিশ ৪টি লেদ মেশিন, ২টি পাইপগান, ২টি ড্রিল মেশিন উদ্ধার করেছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তের পর মনে হচ্ছে ধৃতেরা আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির জন্যই মালপত্রগুলি জড়ো করেছিল।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়ির মালিক মেহেরুল বিবি ও তার স্বামীর খোঁজ চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টিন ও টালির ছাউনি, দরমার বেড়া দেওয়া বাড়িটিতে দু’টি ঘর আছে। একটি ঘর ও উঠোনেই ওই মালপত্রগুলি রাখা হচ্ছিল। দিন কয়েক ধরেই ওই বাড়িতে বাইরে থেকে অনেক লোকজন আসছিল। মাঝে মধ্যেই দু’টি ছোট গাড়ি করে মাল আনছিল বহিরাগতরা। এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘লক্ষণ ভাল লাগছিল না। তাই তড়িঘড়ি পুলিশে খবর দিই।’’
ধৃতদের জেরা করে পুলিশের অনুমান, কিছুদিন আগে ওই চক্রের এক পাণ্ডা কলকাতা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। চক্রটির কলকাতার তফসিয়াতে অস্ত্র তৈরির কারখানা ছিল। পুলিশ সেখানে ধড়পাকড় শুরু করাতে তারা এখানে মালপত্র ও যন্ত্রপাতি এনে গোপনে রেখে দিতে চেয়েছিল। কেন তারা এখানে ওই সব জিনিসপত্র রাখছিল তা জানতেই তাদের নিজেদের হেফাজতে নিচ্ছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মেহেরুলের স্বামীর এক পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে ধৃতেরা ওই বাড়িতে মালপত্র রাখতে এসেছিল। পুলিশ তারও খোঁজ করছে।