পদত্যাগ করলেন বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। মঙ্গলবার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, তৃণমূলের শম্পা অধিকারীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন বনগাঁর মহকুমাশাসক।
শম্পাদেবীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ও অপসারণ চেয়ে সম্প্রতি পঞ্চায়েত সমিতির ১৭ জন সদস্য সম্প্রতি মহকুমাশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২২ জুলাই অনাস্থা নিয়ে ভোটাভুটির দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু তার আগেই সোমবার মহকুমাশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন শম্পাদেবী।
অনাস্থার আগেই সভাপতির পদত্যাগের ঘটনায় বাগদার রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের সদস্যদের সঙ্গেই শম্পাদেবীর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। অনেকেই তাঁর কাজকর্ম পছন্দ করছিলেন না। সে কারণেই তাঁকে অনাস্থা আনা হয়। শম্পাদেবী অবশ্য সে সব প্রসঙ্গে মন্তব্য করে বিতর্ক আর বাড়াতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘দলের নির্দেশেই আমি পদত্যাগ করেছি।’’
বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন সংখ্য ২৭ জন। গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল ১৫টি আসন পেয়েছিল। বামেরা পায় ১০টি, কংগ্রেস ও নির্দল একটি করে আসন পেয়েছিল। সে সময়ে বাগদার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন উপেন বিশ্বাস। মূলত তাঁরই ইচ্ছায় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন শম্পা। কিন্তু দলের একাংশ তা মন থেকে মেনে নিতে পারেননি।
বিধানসভা ভোটের আগে সমিতির বেশ কয়েকজন সদস্য কংগ্রেসে যোগ দেন। যদিও তাঁরা সরকারি ভাবে এখন সমিতিতে তৃণমূলেরই সদস্য। সেই সাত সদস্য-সহ বাম, কংগ্রেস ও নির্দলদের সদস্যেরা ৮ জুলাই মহকুমাশাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি দিয়ে শম্পাদেবীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন।
বাগদার বাম নেতা তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাগদার মানুষ শম্পাদেবীকে সভাপতি হিসাবে মানতে চাইছিলেন না। ওঁর পদত্যাগের ফলে এলাকার মানুষ খুশি হলেন।’’ তাঁর আরও মত, ভোটাভুটিতে হেরে যাওয়ার ভয়ে তৃণমূলই তাঁকে সরিয়ে দিল।
তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, দলের যে সাতজন সমিতির সদস্য অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন, তাঁদের শম্পাদেবীর উপরে নানা কারণে ক্ষোভ ছিল। তৃণমূল নেতৃত্ব এখন চাইছেন শম্পাদেবীকে সরিয়ে ওই কয়েকজনকে কাছে টানতে।
দলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন সভাপতি করার। সে কারণেই শম্পাদেবী পদত্যাগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘শম্পা ভাল মেয়ে। কিন্তু বাড়ির বৌ হওয়ায় পুরো দায়িত্ব সামলাতে সমস্যা হচ্ছিল। এখন অনেক প্রকল্প এসেছে। সে জন্য বেশি সময় দিতে হবে। সব দিক বিবেচনা করেই শম্পাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
মহকুমাশাসক জানিয়েছেন, ২২ জুলাই অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে যে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল, তা আর হচ্ছে না। আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন সভাপতি নির্বাচন করা হবে।