ষাঁড়ের সঙ্গে লড়ে প্রাণে বাঁচলেন বৃদ্ধ

ষাঁড় গুঁতিয়ে রাস্তায় ফেলে দিল। উঠে বসতে পারছেন না তিনি। তবু সাহস করে কোনও রকমে উঠে দাঁড়িয়ে ষাঁড়ের শিং ধরে যুদ্ধ চালিয়ে গেলেন।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

গোবরডাঙা  শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৩১
Share:

জখম: পবিত্রকুমার মুখোপাধ্যায়

ষাঁড় গুঁতিয়ে রাস্তায় ফেলে দিল। উঠে বসতে পারছেন না তিনি। তবু সাহস করে কোনও রকমে উঠে দাঁড়িয়ে ষাঁড়ের শিং ধরে যুদ্ধ চালিয়ে গেলেন।

Advertisement

জীবনে কখনও মারামারি করার অভিজ্ঞতাটুকুও ছিল না তাঁর। কিন্তু প্রাণ বাঁচাতে শেষমেশ ষাঁড়ের সঙ্গে লড়তে হল বছর সত্তরের এক বৃদ্ধকে। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে গোবরডাঙা এলাকায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ প্রাতর্ভ্রমণ সেরে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন গোবরডাঙার প্রসন্নপার্ক এলাকার বাসিন্দা পবিত্রকুমার মুখোপাধ্যায়। অবসরপ্রাপ্ত ওই শিক্ষকের পরনে ছিল ধুতি ও পাঞ্জাবি। স্থানীয় কালীবাড়ি এলাকার বিধান স্মৃতি সঙ্ঘের কাছে হঠাৎ পিছন থেকে কালো রঙের একটি ষাঁড় তাড়া করে তাঁকে। তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। ষাঁড়টি গুঁতো মেরে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়।

Advertisement

বৃদ্ধ উঠে বসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ষাঁড়টি তাঁকে শিং দিয়ে গুঁতোতে তেড়ে আসে। বৃদ্ধ দু’হাত দিয়ে ষাঁড়ের সিং দু’টো ধরে ফেলেন। শুরু হয় লড়াই। ষাঁড়ও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়। পবিত্র ষাঁড়ের শিং ধরে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন।

সাত সকালে তখন রাস্তায় লোকজনও কম ছিল। লড়াই চলার সময়ে পবিত্র সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। কয়েক জন ছুটে আসেন। তাঁরা লাঠি, বাঁশ, ইট দিয়ে মেরে ষাঁড়টিকে সরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ষাঁড় লড়াইয়ের ময়দান ছাড়তে রাজি নয়। পাশে বেড়া দিয়ে ঘেরা জায়গা ছিল। লড়াই করতে করতে পবিত্র ওই বেড়ার মধ্যে হামাগুড়ি দিয়ে এগোতে থাকেন। একটা সময়ে বেড়ার মধ্যে ঢুকে পড়েন। লোকজন তাঁকে কোনও রকমে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যান। পবিত্র গোবরডাঙা পৌর উন্নয়ন পরিষদের সহ সভাপতি। গোবরডাঙায় হাসপাতাল তৈরির দাবি-সহ নানা সামাজিক বিষয়ে আন্দোলনে সামনের সারিতে থাকা মুখ। তাঁর কথায়, ‘‘অলৌকিক ভাবে প্রাণে বেঁচে গিয়েছি। কী ভাবে লড়াই করার শক্তি পেলাম এখনও বুঝতে পারছি না।’’ বাসিন্দারা জানালেন, ওই ষাঁড়টি দীর্ঘ দিন ধরেই এলাকায় ঘোরাঘুরি করে। এলাকার লোকজন ও দোকানিরা তাঁকে খেতেও দেন। কখনও কাউকে আক্রমণ করেনি। তবে দিন কয়েক ধরে ষাঁড়টি কোনও কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। পাঁচ জনকে ইতিমধ্যেই আক্রমণ করে জখম করেছে। একজন চিকিৎসাধীন। গোবরডাঙা ফাঁড়ির পুলিশ আপাতত ষাঁড়টির উপরে নজর রাখছে।

পুরপ্রধান সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘ষাঁড়টিকে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে প্রশাসনিক কর্তাদের বলা হয়েছে। নিয়ে যাওয়ার খরচও আমরা বহন করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন