Corruption

মায়ের থেকেও ‘কাটমানি’

যে ছেলের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ, তিনি তৃণমূল নেতা। মা এবং অন্য কয়েক ভাই যুব তৃণমূল সমর্থক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২০ ০৫:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

মায়ের নামে সরকারি প্রকল্পের টাকা এসেছিল। তার থেকে ১০ হাজার টাকা কাটমানি ছেলেকে দিতে হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরের দফায় টাকা বরাদ্দ হলে ফের ছেলে কাটমানি চেয়েছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে দু’পক্ষের মারপিট বাধে। জখম হয়েছেন কয়েকজন।

Advertisement

ঘটনায় আবার রাজনৈতিক রঙও লেগেছে। যে ছেলের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ, তিনি তৃণমূল নেতা। মা এবং অন্য কয়েক ভাই যুব তৃণমূল সমর্থক।

ক্যানিংয়ের গোপালপুর পঞ্চায়েতের বধূকুলা গ্রামের ঘটনা। সোমবার রাতে গোলমালের জেরে সাতজন আহত হয়েছেন। তাঁদের ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দু’পক্ষই ক্যানিং থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, আবেদা মণ্ডল নামে মহিলার নামে কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা আসে। অভিযোগ, প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা আবেদার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকলে সেখান থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে নেন ছেলে আকছার মণ্ডল ও আকছারের বৌমা তথা গোপালপুর পঞ্চায়েতের সদস্য তাজকিয়া মণ্ডল। আকছারও স্থানীয় তৃণমূল নেতা। দ্বিতীয় দফার টাকার জন্য ছেলেকে অনুরোধ করেন আবেদা। অভিযোগ, আরও ১০ হাজার টাকা না দিলে পরবর্তী প্রক্রিয়া এগোবে না বলে জানিয়ে দেন আকছার ও তাজকিয়ারা। পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মদন নস্করের দ্বারস্থ হন আবেদা।

উপপ্রধান জিও ট্যাগিংয়ের ব্যবস্থা করেন। আবেদার বাড়িতে পঞ্চায়েতের লোক পাঠান। অভিযোগ, তখনই আকছার তাঁদের উপরে চড়াও হয়। আবেদা ও তাঁর অন্য ছেলেদের মারধর করা হয়।

যদিও আবেদা ও তাঁর অন্য ছেলেদের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার অভিযোগ করেছেন আকছার ও তাজকিয়া। তাঁরা বলেন, ‘‘প্রথম দফার টাকা পেলেও ঘর করেননি ওঁরা। তাই দ্বিতীয় দফার টাকার জন্য চাপ দিলেও সরকারি টাকা তছরুপে সায় দিইনি। সে কারণে আমাদের উপরে চড়াও হয়ে মারধর করেছেন ওঁরা।”

উপপ্রধান বলেন, “বয়স্ক মায়ের কাছ থেকেও কাটমানি খেতে ছাড়ছে না। ইচ্ছা করে ঘরের দ্বিতীয় দফার টাকার জন্য ওঁরা প্রক্রিয়া শুরু করেননি। আমরা ব্যবস্থা নেওয়ায় আমাদেরও মারধর করে।”

তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরেই এই ঘটনা বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। আকছার ও তাজকিয়া মূল তৃণমূলের অনুগামী হলেও আবেদা ও তাঁর অন্য ছেলেরা যুব তৃণমূলের সমর্থক। আবেদা বলেন, ‘‘আমার কাছ থেকে একবার ১০ হাজার টাকা নিয়েছে। আবার ১০ হাজার টাকা চাইছে। আমি বলেছি ব্যাঙ্কে টাকা ঢুকলে দেব। কিন্তু ওরা তা মানতে চাইছে না। আমরা যুব তৃণমূল করি বলেই আমাদের হেনস্থা করা হচ্ছে।”

আকছার ও তাজকিয়া অবশ্য এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই বলেই দাবি করেন। ক্যানিং ব্লক তৃণমূলের সহ সভাপতি অর্ণব রায়ও বলেন, “পারিবারিক বিবাদের জেরে ঘটনা, এর মধ্যে কোনও রাজনীতি বা গোষ্ঠীকোন্দল নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন