ফোনে কথা বলতে বলতেই আত্মঘাতী যুবক

হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। সুজয়ের দাদা বিশ্বজিৎ আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন সুজযের বান্ধবীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবরা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:৩০
Share:

সুজয় মণ্ডল।

গলায় জড়ানো ধুতির ফাঁস আলগা করে যখন নামিয়ে আনা হচ্ছে যুবকের দেহ, তখনও কানে গোঁজা হেডফোন। ফোনে কথা বলতে বলতেই বছর উনিশের যুবকটি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অনুমান পুলিশের। মৃত্যুর সময়ে যে তরুণীর সঙ্গে কথা হচ্ছিল তাঁর, দ্বাদশ শ্রেণির সেই ছাত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

বুধবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে হাবরার হাড়িয়া পদ্মাপল্লি এলাকায়। পুলিশ জানায়, মৃত তরুণের নাম সুজয় মণ্ডল। পারিবারিক সূত্রের খবর, দিন কয়েক ধরে বাড়ির ছোট ছেলের সুজয় চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলেন। খাওয়া দাওয়া এক রকম বন্ধই করে দেন। বান্ধবীর সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েনের জেরেই এমন পরিস্থিতি, সেটা জানতেন সুজয়ের বাড়ির লোকজন। সকলে চোখে চোখে রাখছিলেন তাঁকে। কিন্তু বুধবার বিকেল থেকে আচমকাই উধাও হয়ে যান সুজয়। কিছুক্ষণ পরে ঘরের পাশে সিঁড়ির কাঠের রেলিংয়ের সঙ্গে তাঁকে ঝুলতে দেখেন পরিবারের লোকজন।

হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। সুজয়ের দাদা বিশ্বজিৎ আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন সুজযের বান্ধবীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বছর আঠারোর ওই তরুণীকে দক্ষিণ হাবরা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বারাসত আদালতে তোলা হলে বিচারক মেয়েটিকে ১৪ দিন জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজয় বাণীপুর বাণী নিকেতন স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। মেয়েটি হাবরার একটি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে। বছরখানেক আগে তাঁদের পরিচয় হয়। ক্রমে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। সুজয়ের পরিবারের দাবি, তাঁদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল মেয়েটির। সুজয়কে বিয়ে করবে বলেও কথা দিয়েছিল। কারও কোনও আপত্তি ছিল না তাতে। কিন্তু দু’জনের মধ্যে কিছু দিন ধরে দূরত্ব বাড়ছিল। অন্য এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক জড়িয়ে পড়েন ওই তরুণী। ফেসবুকে দু’জনের ছবি পোস্ট করেন।

বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘ওদের সম্পর্কটা ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল। এমনকী, ভাইকে ও ফোন করতে বারণ করে দিয়েছিল। এটা মেনে নিতে পারছিল না ভাই।’’

বুধবার আত্মহত্যার আগে দু’জনের মধ্যে ফোনে কথা কাটাকাটি হয়। সুজয় বন্ধুদের ফোন করে সে কথা জানিয়েছিলেন। মৃত্যুর ঠিক আগের মুহূর্তে বান্ধবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। পুলিশ ওই যুবকের মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করেছে।

মেয়েটির পরিবার এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।

সুজয় মণ্ডল

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন