পরিদর্শন: হাসপাতালে অধীর। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র
দেগঙ্গার ডেঙ্গি পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে বৃহস্পতিবার সেখানকার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মহিলা ও পুরুষ রোগীর চিকিৎসা একই ঘরে চলছে দেখে অধীরবাবু বলেন, ‘‘যে কোনও রাজ্যে ও দেশে রোগ হতেই পারে। রোগ হওয়াটা সেই সরকারের বা শাসকের অপরাধ বলে আমরা মনে করি না। তবে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে পুরুষের পাশে মহিলাদের রেখে চিকিৎসা হয়, এটা আমার জানা ছিল না। এখানে সেটাই চলছে! আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।’’
অধীরের অভিযোগ, ডেঙ্গি মোকাবিলায় সরকারের মনোযোগ নেই। জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে গেলে উপযুক্ত চিকিৎসা না করে তাঁদের রেফার করে দেওয়া হচ্ছে অন্য হাসপাতালে। ডেঙ্গু ধরা পড়ার পর রোগীর মৃত্যু হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভয়ে চিকিৎসকরা মৃত্যুর কারণ হিসাবে ‘ডেঙ্গি’ লিখছেন না। অন্য কারণ লিখে দিচ্ছেন।
অধীরের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে রাজনীতি করছেন। অন্য রাজ্যে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সংখ্যার সঙ্গে এ রাজ্যের সংখ্যার তুলনা করছেন। আবেদন করছি, উনি মৃত্যুর প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির আরও সমালোচনা, ‘‘অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ এবং বিশ্ব বাংলার প্রচারে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ পোস্টারে শহর থেকে গ্রাম ছয়লাপ হয়ে গিয়েছে। অথচ ডেঙ্গি মোকাবিলার জন্য সচেতনতামূলক পোস্টার গ্রামে-গঞ্জে লাগাতে দেখা যায়নি।’’
অধীরের দেগঙ্গা সফরে তাঁর সঙ্গে ছিলেন বাদুড়িয়ার দলীয় বিধায়ক আব্দুর রহিম, উত্তর ২৪ পরগনার কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক অমিত মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ ঘোষ। এ দিন দেগঙ্গা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরজ সিংহ ও সিনিয়র ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তৃপ্তি হালদারের সঙ্গে কথা বলেন অধীর। মহিলা ও পুরুষ রোগীদের একসঙ্গে রেখে চিকিৎসা প্রসঙ্গে তৃপ্তিদেবী বলেন, ‘‘অনেক আগে থেকেই এটা চলছে। পরিকাঠামো না থাকায় নতুন করে এঁদের পৃথক করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে আগামীতে বদলের কথা ভাবা হবে।’’ এ দিন বিকেলে উত্তর ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গেও দেখা করেন অধীর। তাঁর তোলা সমস্যাগুলির সমাধান করা হবে বলে জানান জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক।