পুরস্কার: বাড়ি তৈরির সমস্ত কাজ শেষ করার জন্য ঘরের রেপ্লিকা দিয়ে সংবর্ধনা করা হচ্ছে গ্রামবাসীদের। নিজস্ব চিত্র
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাওয়া টাকায় কেউ মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন, কেউ বা গরু-ছাগল কিনছেন!
নির্দিষ্ট সময়ের পরেও ওই কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বা়ড়ি তৈরি না হওয়ায় তদন্তে নেমেছিলেন গাইঘাটা ব্লকের প্রশাসনিক কর্তারা। তাতে এমনই সব তথ্য জানতে পেরে আতান্তরে পড়েছেন তাঁরা।
জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘ওই প্রকল্পে জেলাতে তিরিশ হাজার বাড়ি তৈরি হচ্ছে। প্রকল্প সম্পর্কে উপভোক্তাদের বোঝাতে হচ্ছে। যাতে তাঁরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করেন।’’
সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার প্রত্যেকটি ব্লকের প্রশাসনিক কর্তারা বাড়ি তৈরির কাজের গতি খতিয়ে দেখতে এলাকায় ঘুরছেন। যাঁরা ওই প্রকল্পের টাকা পেয়েছেন তাঁদের বাড়ি কতটা তৈরি হয়েছে, কী কারণে নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হচ্ছে না, সবই খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। আর তাতেই প্রশাসনিক কর্তারা জানতে পেরেছেন, গ্রামের মানুষ বাড়ি তৈরির টাকায় মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন, কেউ চিকিৎসা করাচ্ছেন। অনেকে আবার ওই টাকায় গরু, ছাগলও কিনছেন। কেউ আবার বাইরে কাজে চলে যাচ্ছেন। এ ভাবেই টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে ঘর তৈরি হচ্ছে না। গাইঘাটার বিডিও বিরাজকৃষ্ণ পাল বলেন, ‘‘টাকা অন্য খাতে খরচ করে ফেলছে বলে বাড়ি তৈরি করতে দেরি হচ্ছে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, এই প্রকল্পে পাকা বাড়ি তৈরি করতে মানুষকে চারটি কিস্তিতে টাকা দেওয়া হয়। প্রথমে ৪০ হাজার টাকা, তাতে বাড়ির ভিত পর্যন্ত করতে হবে। কাজ শেষ হলে দ্বিতীয় কিস্তির ৩০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। ওই টাকায় জানালা পর্যন্ত করতে হবে। তারপর মিলবে ৪০ হাজার টাকা। ওই টাকায় বাড়ির কাজ শেষ করতে হবে। শেষে দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা। প্রশাসনের কর্তারা বাড়িতে গিয়ে কাজের ছবি তুলে আনবেন। তারপরে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা চলে যাবে। তবে একটি কাজ শেষ না হলে পরের কাজের টাকা পাওয়া যাবে না।
প্রশাসনের এক কর্তা জানান, একটি আর্থিক বর্ষের মধ্যে বাড়ি তৈরি না হলে উপভোক্তাদের টাকা পেতে সমস্যা হতে পারে। কারণ, গোটা প্রক্রিয়াটি হয় অনলাইনের মাধ্যমে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে গাইঘাটা ব্লকে ২০১৬-১৭ আর্থিক বর্ষে বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়েছিল ১,৯১২ জনকে। এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত বাড়ি শেষ করতে পেরেছেন মাত্র ২২২ জন। যদিও ওই কাজে গাইঘাটা ব্লকই জেলার মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে।