Sports School

ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু সরকারি ক্রীড়া বিদ্যালয়ে 

দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পরে ফের চালু হল রাজ্যের একমাত্র সরকারি ক্রীড়া বিদ্যালয়।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

হাবড়া শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:৫৩
Share:

প্রতীকী ছবি

দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পরে ফের চালু হল রাজ্যের একমাত্র সরকারি ক্রীড়া বিদ্যালয়। সোমবার থেকে হাবড়ার বাণীপুরে ওই স্কুলে পঠনপাঠন ও খেলাধুলা শুরু হয়েছে। কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন হাবড়ার বিধায়ক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য শিক্ষা দফতরের জয়েন্ট ডিরেক্টর দেবাশিস সরকার, ডেপুটি ডিরেক্টর সুকান্ত বসু, জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী।

Advertisement

লেখাপড়ার পাশাপাশি উন্নতমানের খেলোয়াড় তৈরি করার জন্য ২০০১ সালে রাজ্যের একমাত্র সরকারি ক্রীড়া স্কুল হিসাবে হাবড়ার বাণীপুরে তৈরি হয় বিআর অম্বেডকর ক্রীড়া বিদ্যালয়। ২০০৮ সাল থেকে পড়ুয়া ভর্তি বন্ধ ছিল। ২০১৩ সাল থেকে স্কুলটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে হাবড়ার মানুষ সেটি খোলার দাবি জানিয়েছিলেন। শিক্ষা দফতর নতুন করে স্কুলটি চালু করায় খুশি হাবড়ার মানুষ। তাঁরা আশা করছেন, আগের মতোই এখান থেকে খুদে প্রতিভা উঠে আসবে।

স্কুলটি এখন মাধ্যমিক স্তরের। জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী গত বছর মধ্যমগ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে জানতে পেরেছিলেন ক্রীড়া স্কুলটি বন্ধ হয়ে রয়েছে। এরপরেই নির্দেশ দেন, দ্রুত স্কুলটি ফের চালু করতে। পরিকাঠামো তৈরি করা হয়। স্কুলটি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করার জন্য শিক্ষা দফতরের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে।’’ এখন ৩১ জন ছাত্রকে নিয়ে নতুন করে পথচলা শুরু হয়েছে। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী দিনে ছাত্রীদেরও ভর্তি নেওয়া হবে।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে ২০২০ শিক্ষা বর্ষে পঞ্চম শ্রেণিতে ছাত্রদের ভর্তি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কমিশনার অব স্কুল এডুকেশন, সৌমিত্র মোহন ওই বিষয়ে ২ জানুয়ারি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ অনুমোদিত আবাসিক এই মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে।

সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ওই আবাসিক ক্রীড়া বিদ্যালয়ে ২০২০ শিক্ষাবর্ষে শুধুমাত্র অ্যাথলেটিক্স বিভাগে ৩০ জন ছাত্রকে ক্রীড়া দক্ষতা অনুসারে এবং সরকারি ব্যয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া হবে। এখানে ভর্তি হওয়ার মাপকাঠি ছিল। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্রীড়া বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গেলে পড়ুয়াদের ২০১৯ সালে, ৩৭তম রাজ্য প্রাথমিক ও নিম্নবুনিয়াদি বিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যোগদান করে থাকতে হবে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে পড়ুয়ারা ট্রায়াল দিতে এসেছিল। তাদের মধ্যে ৩১ জনকে বেছে নেওয়া হয়। তাদের নিয়ে শুরু হয়েছে পঠনপাঠন ও খেলাধুলো।

২০০১ সালে বিদ্যালয়টি তৈরি হওয়ার পরে প্রতি বছর পঞ্চম শ্রেণিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি নেওয়া শুরু হয়েছিল। পঞ্চম শ্রেণিতে ১৫ জন ছাত্রী ও ১৫ জন ছাত্র ভর্তির সুযোগ পেত। রাজ্যের প্রতি জেলার প্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ইভেন্টে যারা প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান লাভ করত সেই সব ছেলেমেয়েদের ইন্টারভিউয়ে ডাকা হত। তাদের স্কুলের মাঠে সরেজমিন ক্রীড়া দক্ষতা ও শারীরিক পরীক্ষা নেওয়ার পরে যারা উপযুক্ত হত তাদের ভর্তি নেওয়া হত।

পড়ুয়াদের খাওয়া-দাওয়া, থাকা, লেখাপড়া ও খেলাধুলার সরঞ্জাম সব কিছুই সরকার বহন করত। পরবর্তী সময়ে স্কুলটি মাধ্যমিকে উন্নীত হয়। এখানকার খেলাধুলার মান উন্নত ছিল। জাতীয় স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় এখানকার পড়ুয়ারা সাফল্য দেখিয়েছে। এখানে মূলত অ্যাথলেটিক্স, জিমনাস্টিক, তিরন্দাজি ফুটবল ও কাবাডি শেখানো হত।

স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে ছাত্র ও ছাত্রীদের থাকার আবাসনগুলি দীর্ঘদিন ধরে তালা বন্ধ হয়ে পড়েছিল। দেওয়াল জুড়ে শ্যাওলা জমে। শৌচাগারগুলির অবস্থা আরও ভয়াবহ। তার মধ্যে আগাছা। বন জঙ্গলে মুখ ঢেকেছিল শৌচাগারগুলি। বিষধর সাপেদের নিরাপদ আস্তানা হয়ে ওঠে স্কুল। ক্যান্টিনের অবস্থাও খারাপ। উপরের টিনের ছাউনি ভেঙে গিয়েছিল। মাঠও পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হয়ে যায়।

এখন সব কিছু নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। ঝাঁ চকচকে স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ব্যস্ত নতুন ক্রীড়া প্রতিভা তুলে আনতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন