ঘরোয়া ভাবেই চলছে শুশ্রূষা। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়।
অজানা জ্বরে মৃত্যু হল সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রের। পুলিশ জানায়, শুক্রবার গভীর রাতে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে মৃত ওই ছাত্রের নাম শেখ সাহিনুর (১৪)। বাড়ি দেগঙ্গার আমুনিয়া গ্রামে। সে রায়পুর নিরামিশা আদর্শ বিদ্যালয়ে পড়ত।
এলাকার মানুষের অভিযোগ, দেগঙ্গা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে অজানা জ্বরের প্রকোপ শুরু হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। শনিবার সকাল থেকে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর থেকে বসানো হয়েছে স্বাস্থ্য শিবির। চলছে রক্ত পরীক্ষাও।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার থেকে জ্বর হয়েছিল সাহিনুরের। পরিবারের লোকজন তাঁকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। শুক্রবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকেলে সেখান থেকে সাহিনুরকে কলকাতার আরজিকরে স্থানান্তরিত করা হয়। গভীর রাতে মারা যায় সে।
সাহিনুরের বাবা শেখ বদরুদ্দিন বলেন, “জ্বরে ছেলেটা এতটাই কাহিল হয়ে পড়েছিল, দাঁড়াতে পারছিল না। সঙ্গে সঙ্গে ওকে হাসপাতালে ভর্তি করি। জ্বরের কারণটা জানতে পারেনি। রক্ত পরীক্ষার সময়ই দিল না।”
দিন কুড়ি আগে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা একাদশ শ্রেণির আরও এক ছাত্র শামিম আখতার অজানা জ্বরে আরজিকর হাসপাতালে মারা যায়। সে-ও একই স্কুলের ছাত্র ছিল। তার ভাই সাহিল আখতার ও জেঠিমা মেহেরুন্নেসা বিবি জ্বর নিয়ে বারাসত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এই গ্রাম ছাড়াও পার্শ্ববর্তী চাকলা পঞ্চায়েতের কাঁঠালতলা গ্রামের বেশ কিছু মানুষ কিছু দিন হল জ্বরে ভুগছেন। পরিস্থিতি সামলাতে চেষ্টা চালাচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। শনিবার দেগঙ্গা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সূরজ সিংহের উপস্থিতিতে সকাল থেকে চলছে স্বাস্থ্য শিবির। বিএমওএইচ বলেন, “আমরা খবর পেয়ে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। মানুষের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।”
স্থানীয় বিধায়ক রহিমা মণ্ডল জানান, অজানা জ্বরে আক্রান্তের খবর পেয়ে তিনি মেডিক্যাল টিম পাঠিয়েছেন। শনিবার বিকেলে তিনি নিজেও এলাকা ঘুরে দেখেন। আক্রান্ত মানুষ যাতে ঠিক মতো চিকিৎসা পান, সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন।
যদিও কাঁঠালতলা গ্রামের সাহানারা বিবির আক্ষেপ, ‘‘এই ব্যবস্থা আগে করা হলে মানুষের এমন পরিস্থিতি হতো না। এ ভাবে কাউকে মরতেও হতো না।’’