এখানেই কাটা হচ্ছে ম্যানগ্রোভ। ছবি: সামসুল হুদা।
বন দফতরের লাগানো ম্যানগ্রোভ কেটে সরকারি জমি প্লট করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের কিছু সমর্থকদের বিরুদ্ধে। বন দফতরের পক্ষ থেকে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর-সহ সংশ্লিষ্ট নানা মহলে গাছ কাটার অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
বাসন্তীর ঝড়খালির বনমালির চরের কাছে সমবায় মোড়ে ২০ বিঘার উপরে ওই জমি বিক্রি হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। ঝড়খালি পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ মণ্ডলের নেতৃত্বে স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতার তাতে মদত আছে বলে জানাচ্ছেন ওই বাসিন্দারা।
বাসন্তীর হেড়োভাঙা নদীর কাছে ওই জমিতে বন দফতর এক সময়ে ম্যানগ্রোভ লাগিয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘সরকারি জমি গায়ের জোরে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব প্লট করে বিক্রি করে দিচ্ছে। প্রশাসন সব জেনেও চুপ করে আছে। কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’’ আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এলাকার অধিকাংশ জমি উদ্বাস্তুদের। অথচ প্রশাসনের চোখের সামনে তা জবর দখল হচ্ছে। কারও কোনও হেলদোল নেই।’’ স্থানীয় সূত্রের খবর, ট্র্যাক্টর দিয়ে মাটি কেটে বাঁধ দিয়ে প্লট করা হচ্ছে। ১০ ফুট চওড়া ও ১৫ ফুট লম্বা এক একটি প্লট প্রায় দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বন দফতরের এক আধিকারিক ম্যানগ্রোভ গাছ কাটা নিয়ে বাধা দিতে গেলে তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগের ডিএফও তৃপ্তি সা বলেন, ‘‘ওই এলাকায় ম্যানগ্রোভ গাছ কাটা ও জমি বিক্রি নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন যদি কোনও ব্যবস্থা না নেয়, তা হলে আমরা একা কী করতে পারি!’’ মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের এসডিএলআরও অরিন্দম বক্সি বলেন, ‘‘ওই এলাকায় সব জমি আমাদের দফতরের অধীনে নয়। আর ওই এলাকায় জমি যে এ ভাবে বিক্রি করা হচ্ছে, তা আমাদের জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ঘটনার খবর তিনিও শোনেননি বলে দাবি করেছেন মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য। খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনিও।
এ দিকে, তাঁর বিরুদ্ধে গাছ কাটায় মদতের অভিযোগ উড়িয়ে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আদৌ কোনও জমি বিক্রি হয়নি। যাঁরা ওই খাস জমি দখল করে রেখেছিলেন, তাঁদের মধ্যেই জমি বিলি-বণ্টন করা হচ্ছে।’’