তৃণমূল নেতা খুনে ধৃত জোটপ্রার্থী

ভোটের আগে খুন হয়েছিলেন কাকদ্বীপের নেতাজি পঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূল সভাপতি আবুজার মোল্লা। সেই খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার ভোররাতে গ্রেফতার হলেন এলাকার কংগ্রেস নেতা রফিকউদ্দিন মোল্লা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ০৮:১৫
Share:

ধৃত রফিকউদ্দিন মোল্লা।

ভোটের আগে খুন হয়েছিলেন কাকদ্বীপের নেতাজি পঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূল সভাপতি আবুজার মোল্লা। সেই খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার ভোররাতে গ্রেফতার হলেন এলাকার কংগ্রেস নেতা রফিকউদ্দিন মোল্লা। তিনি বিধানসভা নির্বাচনে কাকদ্বীপের জোট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে লড়াই করে হেরে যান।

Advertisement

বুধবার রফিককে কাকদ্বীপ আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ৬ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। এ দিন আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে রফিকউদ্দিন দাবি করেছেন, ‘‘এই ঘটনায় আমার কোনও যোগ নেই। রাজনৈতিক ভাবে ফাঁসানো হয়েছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের আগে দলীয় বৈঠক সেরে বাড়ি ফেরার সময়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন আবুজার। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৩ জন সিপিএম নেতা-সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই চার্জশিটে ওই ৫ জন-সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে খুনে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই তালিকায় আছে রফিকউদ্দিনেরও নাম।

Advertisement

বুধবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে জামিনের আর্জি জানিয়ে তাঁর আইনজীবীরা দাবি করেন, যেহেতু চার্জশিট জমা করা হয়ে গিয়েছে, তাই আর নতুন করে অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন কী? জামিনের বিরোধিতা করে সরকারি আইনজীবী গুরুপদ দাস দাবি করেন, যারা গ্রেফতার হয়েছে, তারা জেরায় রফিকউদ্দিনের সঙ্গে খুনের ব্যাপারে আলোচনার কথা স্বীকার করেছে। তাই রফিকউদ্দিনকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। প্রয়োজনে পুলিশ অতিরিক্ত চার্জশিট জমা করতে পারে।

রফিকউদ্দিনের আইনজীবীরা আদালতে সওয়াল-জবাবের সময়ে আরও বলেন, ‘‘অভিযোগে নাম থাকা দুই সিপিএম এবং এক কংগ্রেস নেতার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তা হলে পুলিশ তদন্ত শেষ করেছে বলেই তো ধরতে হয়। তা হলে কেন রফিকউদ্দিনকে নতুন করে পুলিশি হেফাজতে নিতে হচ্ছে?

সব পক্ষের বয়ান শুনে কাকদ্বীপের এসিজেএম বিচারক শিশিরকুমার মেউর অভিযুক্তের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন। মামলায় আগে গ্রেফতার হওয়া অন্য দুই অভিযুক্তের জামিনের আবেদনও এ দিন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।

জেলা কংগ্রেস সভাপতি অর্ণব রায়ের অভিযোগ, ‘‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন রফিকউদ্দিন। বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করব।’’ প্রদেশ কংগ্রেস নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্রের দাবি, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে। রফিকউদ্দিনকে ভোটের আগে গ্রেফতার করা হলে তৃণমূল জনসমর্থন পেত না। তাই ভোটের পরে ধরা হল।’’ জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি শক্তিপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের কর্মী খুনে এফআইআরে রফিকউদ্দিনের নাম ছিল। আইন আইনের পথে চলবে। কংগ্রেস দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। তাই উল্টোপাল্টা বকছে।’’

এ দিন মামলার শুনানি চলাকালীন কাকদ্বীপ আদালতের বাইরে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। তার জেরে দীর্ঘক্ষণ থানায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়নি অভিযুক্তকে। বিক্ষোভ মিটলে তাকে ঢোলাহাট থানা য় নিয়ে যাওয়া হয়।

ছবি: শান্তশ্রী মজুমদার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন