পরিত্যক্ত ভবনে চলছে অঙ্গনওয়াড়ি

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশু অপুষ্টি দূর করতে, স্কুল ছুট কমাতে এবং প্রসূতিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের অধীনে অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র চালু হয়। ওই ব্লকে এখন ৩৯৯টি অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রে আছে।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৭ ০০:১০
Share:

বেহাল: ৩৯৬ নম্বর অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

পরিত্যক্ত ভবন। ত্রিপলের ছাউনি। ঘরের মধ্যেই পড়ে রয়েছে মদের বোতল। সেখানেই বসে রয়েছে শিশুরা।

Advertisement

মগরাহাট ২ ব্লকের ধনপোতা পঞ্চায়েতের ৩৯৬ নম্বর অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রটির এই হাল। শিশু ও প্রসূতি মিলিয়ে ওই কেন্দ্রে এখন ৫০জন রয়েছেন।

শুধু ওই কেন্দ্র নয়, ওই ব্লকের সব অঙ্গনওয়াড়ির অবস্থাই খারাপ। কোথাও পলিথিন ঢাকা তাঁবুতে চলছে পঠনপাঠন। আবার কোথাও বাঁশ গাছের ছায়ায় চলছে খাওয়া-দাওয়া। রান্নাঘর, শৌচাগার, পানীয় জল— কোনও কিছুরই ব্যবস্থা নেই। রোদ বৃষ্টি হলেই পরিষেবার কাজ বন্ধ রাখতে হয় বলে দাবি অঙ্গনওয়াড়ির কর্মীদের।

Advertisement

মগরাহাট ২ ব্লকের সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক শুভঙ্কর সমাদ্দার বলেন, ‘‘জমির অভাবে নিজস্ব ভবন তৈরি করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে বেশকিছু কেন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ভাড়া বাড়িতে চলছে।’’

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশু অপুষ্টি দূর করতে, স্কুল ছুট কমাতে এবং প্রসূতিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের অধীনে অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র চালু হয়। ওই ব্লকে এখন ৩৯৯টি অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রে আছে। পরানখালি উত্তরপাড়ার কেন্দ্রটিতে গিয়ে দেখা গেল, ঝোপে ঢাকা ভাঙাচোরা মাটির দেওয়াল। টালির চালের বারান্দায় পরিষেবার কাজ চলছে। ওই কেন্দ্রের কর্মী চাঁদবালা কুলে জানান, এমন বেহাল পরিকাঠামোর মধ্যে দিনের পর দিন কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু কিছু করার নেই।

শুধু যে বেহাল পরিকাঠামো তা নয়, কেন্দ্রগুলি নিয়মিত পরিদর্শনও হয় না। কারণ একজনমাত্র সুপারভাইজার আছেন। যাঁর পক্ষে সব অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র পরিদর্শন করা সম্ভব নয়। সুপারভাইজার তপতি দাশগুপ্ত জানান, সারা মাসে প্রতিটি কেন্দ্রে গিয়ে রির্পোট তৈরি করে জমা দিতে হয়। কিন্তু এতগুলি কেন্দ্রে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে শুভঙ্করবাবু বলেন, ‘‘সুপারভাইজার নিয়োগের জন্য জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। শীঘ্রই ব্যবস্থা হবে।’’

ওই কেন্দ্রগুলিতে শিশুদের পঠনপাঠনের পাশাপাশি তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হয়। অপুষ্টি শিশুদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। পুষ্টি খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি নিয়মিত ওজন পরীক্ষা করা হয়। একই ভাবে প্রসূতি গর্ভবতীদের নিয়মিত স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, বাড়িতে সন্তান প্রসব না করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াটাও অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের কর্মীদের দায়িত্বে পড়ে। কিন্তু কর্মী কম থাকায় এ সব কিছুই হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

ওই অঙ্গনওয়াড়িগুলিতে শিশু পাঠিয়েও নিশ্চিন্ত নন অভিভাবকেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই চলে রান্না। বর্ষাকালে বিভিন্ন পোকামাকড় ঘোরে। যদি বাচ্চাদের কিছু কামড়ায়। তাই চিন্তায় থাকি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement