তৃণমূলের এক ছাত্র নেতাকে খুনের মামলার সাক্ষীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বনগাঁ থানার পুলিশ। রাকেশ বৈরাগী নামে ওই ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার বনগাঁ আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখবার নির্দেশ দিয়েছেন।
২০১৩ সালের ৩ জুলাই বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সহ সাধারণ সম্পাদক সৌম্য বিশ্বাস খুন হন। অভিযোগ, জন্মদিনে তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে গুলি করে খুন করা হয়। বনগাঁর কোড়ারবাগান থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। সৌম্যর খুনের মামলাটি চলছে বনগাঁ আদালতে। সৌম্যের মাসি মঞ্জু অধিকারী গত মার্চ মাসে বনগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ করে জানান, মামলায় মিথ্যে সাক্ষী দেওয়ার জন্য তাঁকে এবং বাকি সাক্ষীদের চাপ দিচ্ছে রাকেশ। না হলে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। মঞ্জুদেবীর দাবি, ‘‘সৌম্যর খুনে রাকেশ জড়িত। বিচারের আশায় হাইকোর্ট ও সিআইডির কাছে যাওয়ার পর থেকেই রাকেশ আমাদের হুমকি দিচ্ছে।’’ অভিযোগের এত দিন পরে কেন ধরা হল রাকেশকে? পুলিশের দাবি, রাকেশ এতদিন পলাতক ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, সৌম্যকে খুনের অভিযোগে রাকেশ বৈরাগীর ছেলে হিমাংশু বৈরাগী ওরফে হিমুকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে সে জামিনে ছাড়া পেলেও ২০১৪ সালে ৯ মার্চের সন্ধ্যায় সে খুন হয়ে যায়। সেই ঘটনায় তিন জন গ্রেফতার হয়। হিমাংশু খুনের ঘটনায় সিআইডি তদন্তের দাবি তুলে ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে তাঁর ঠাকুমা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন। সেই মামলায় গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি নির্দেশ দেন, খুনের মামলাটি বনগাঁ আদালত থেকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে সরিয়ে যেতে। একই সঙ্গে বিচারপতি বাগচীর নির্দেশ, ওই মামলায় বিশেষ সরকারি আইনজীবী হিসেবে অশোক বক্সীকে নিযুক্ত করতে। এ দিন আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে রাকেশ দাবি করেন, ‘‘আমার ছেলের খুনের ঘটনায় জড়িত রয়েছেন বনগাঁর পুরপ্রধান। সম্প্রতি হাইকোর্ট একটি নির্দেশে দিয়েছে। তাই প্রতিহিংসাবশত আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে এ দিন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘হাইকোর্টে মামলা চলছে। মঞ্জুদেবীর অভিযোগের ভিত্তিতে রাকেশ গ্রেফতার হয়েছে। রাজনৈতিক স্বার্থে এইসব মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।’’