ভিনদেশি আসামীদের বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে তদন্তকারীর সই ও থানার সিল জাল করার অভিযোগে বসিরহাট আদালতের এক ল’ক্লার্ককে গ্রেফতার করল বসিরহাট থানার পুলিশ। আবুদৈয়ান রোড এলাকায় বাড়ি ধৃত সুজয় দাস ওরফে জগার। পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার বিকেলে তাঁকে বসিরহাটের বোটঘাট এলাকার ইটিন্ডা রাস্তার উপর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এই মামলায় আগে আরও দু’জন ল’ক্লার্ককে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
বসিরহাটের এসডিপিও শ্যামল সামন্ত বলেন, ‘‘গত মে মাসে অনুপ্রবেশ-সংক্রান্ত একটি মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় পুলিশের পক্ষে তদন্তকারীর অফিসারের আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল। তার আগেই জাল করে সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে সুজয় দাসের বিরুদ্ধে। তারই প্রেক্ষিতে পুলিশ এ দিন বাড়ি যাওয়ার পথে সুজয়কে গ্রেফতার করে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে বসিরহাট আদালত চত্বরে একটি চক্র হাজার হাজার টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশিদের ভারতীয় হিসাবে প্রমাণের জন্য জাল নথি তৈরির কাজে বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গত মে মাসে এ বিষয়ে স্বরূপনগর থানার পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে বসিরহাট থানার পুলিশ তদন্ত নামে।
পুলিশের দাবি, প্রাথমিক তদন্ত জানা গিয়েছে ওই চক্রের সঙ্গে আদালতকর্মী, আইনজীবী এবং ল’ক্লার্কদের একাংশের জড়িত থাকার আশঙ্কা প্রবল। আদালতের নথি জাল করার অভিযোগে সম্প্রতি বসিরহাট আদালতের এক সরকারি আইনজীবিকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছিল।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গত ২২ মার্চ অবৈধ ভাবে বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে এ পারে এসে ধরা পড়ে তিন বাংলাদেশি। ওই মামলায় আদালতের কাছে যে রিপোর্ট জমা পড়েছিল, তা দেখে সন্দেহ হয় বিচারকের। তিনি এই মামলায় স্বরূপনগর থানার এএসআই তথা তদন্তকারী অফিসার কুমারেশ মণ্ডলের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। গত ১০ মে আদালতে হাজির হয়ে কুমারেশবাবু বিচারককে জানান, তাঁর লেখা বলে যে রিপোর্টটি আদালতে জমা পড়েছে, সেটি ভুয়ো। আরও যা যা কিছু নথি জমা পড়েছে, তা-ও জাল। এমনকী, থানার সিলও নকল করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, এরপরে ওই পুলিশ অফিসার বিচারকের নির্দেশে বসিরহাট থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত নামে পুলিশ। সুকুমার বারুই এবং শম্ভু কুণ্ডুকে গ্রেফতার করা হয়। এ দিন পুলিশ সুজয় দাস ওরফে জগাকেও ধরল। এ দিন ধৃতের পক্ষে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয়।