স্ত্রীকে খুন করে, আত্মহত্যা স্বামীর

পুলিশ জানিয়েছে, শ্যামলী প্রামাণিককে (২৭) ভালবেসে বছর দশেক আগে বিয়ে করেন পার্থ (২৯)। শ্যামলীর বাপের বাড়ি বনগাঁর জয়পুর পালপাড়ায়। পার্থ থাকতেন গাইঘাটার আংরাইলে। তাঁদের দুই মেয়ে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৫০
Share:

শ্যামলী ও পার্থ।

সমিতি থেকে ঋণ করে কয়েক হাজার টাকা আনতে চাপ দিচ্ছিলেন স্বামী। স্ত্রী রাজি না হওয়ায় অশান্তি চলছিল। তারই জেরে স্ত্রীকে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত স্বামী নিজেও চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

Advertisement

শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁর জয়পুর পালপাড়া এলাকায়। দেহ দু’টি ময়নাতদন্তের জন্য বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ও বনগাঁ জিআরপি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, শ্যামলী প্রামাণিককে (২৭) ভালবেসে বছর দশেক আগে বিয়ে করেন পার্থ (২৯)। শ্যামলীর বাপের বাড়ি বনগাঁর জয়পুর পালপাড়ায়। পার্থ থাকতেন গাইঘাটার আংরাইলে। তাঁদের দুই মেয়ে।

Advertisement

শ্যামলীর বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, পার্থ সীমান্তে পাচারের কাজ করতেন। পরে রাজমিস্ত্রির কাজ নেন। মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীর উপরে নির্যাতন করতেন। শ্যামলীর বাপের বাড়িতে চলে আসেন। বছর দু’য়েক ধরে পার্থও শ্বশুরবাড়িতে এসে ওঠেন।

শ্যামলীর মা শিখা বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের এখানেও মেয়ের সঙ্গে অশান্তি করত জামাই। মেয়েকে মারধর করত। কয়েকবার জামাইকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে চেয়েছিলাম। মেয়ে আবার তাতে রাজি ছিল না। জামাইকে খুবই ভালবাসত আমার মেয়ে।

তাঁর দিদি মল্লিকা বলেন, ‘‘বোন বিমা সংস্থার এজেন্ট হিসাবে কাজ করত। পার্থ কিছু করত না। সম্প্রতি বোনকে টাকা ঋণ করে আনার জন্য চাপ দিচ্ছিল। আগেও বোন ধারদেনা করে পার্থকে টাকা দিয়েছিল। সব টাকা বোনকেই শোধ করতে হত। পার্থ নেশা করে টাকা উড়িয়ে দিত।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে ছিলেন পার্থ, শ্যামলী ও তাঁদের চার বছরের মেয়ে। বৃহস্পতিবার সকালে শিখা বড় নাতনিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে দেখেন, খাটে শ্যামলী মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। গলায় গামছার ফাঁস জড়ানো। পার্থ ও তাঁর ছোট মেয়ে বাড়ি ছিলেন না।

শুক্রবার সকাল ৬টা নাগাদ বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার চাঁদপাড়া স্টেশন-সংলগ্ন এলাকা থেকে পার্থর দেহ উদ্ধার করে বনগাঁ জিআরপি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, স্ত্রীকে খুন করে মৃত্যুর আগে ছোট মেয়েকে পার্থ আংরাইলে এলাকায় নিজের মায়ের কাছে রেখে আসেন। তারপরে বনগাঁ স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে চাঁদপাড়ায় যান। সেখানে বনগাঁ থেকে শিয়ালদহের দিকে যাওয়া ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন