kali Puja 2022

শব্দবাজির তাণ্ডব বন্ধ, স্বস্তিতে মানুষ

এ বছর করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় মানুষ আশঙ্কা করেছিলেন, শব্দবাজির তাণ্ডব বাড়বে। তবে বাস্তবে পরিবেশ ছিল সম্পূর্ণ অন্য রকম।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৫৬
Share:

উৎসারিত-আলো: ফানুস উড়িয়ে উদ‌যাপন। বুধবার হাবড়ায়। ছবি: সুজিত দুয়ারি।

পুলিশ-প্রশাসনের সদর্থক ভূমিকা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে এবার বনগাঁ মহকুমা ও বারাসত মহকুমার হাবড়া-অশোকনগরে কালীপুজোর দিনগুলিতে শব্দবাজির তাণ্ডব শোনা গেল না। তাতে স্বস্তি পাচ্ছেন মানুষ।

Advertisement

অভিযোগ, গত বছর করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও কালীপুজোর দিনগুলিতে শব্দবাজির তাণ্ডবে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। পথে বেরিয়ে অনেকে দ্রুত বাড়ি ফিরে যান। কান ফাটানো আওয়াজের সঙ্গে চারদিক ধোঁয়া ও বারুদের গন্ধে ভরে ওঠে। গভীর রাত পর্যন্ত ভেসে এসেছিল বাজি ফাটার শব্দ। বাড়িতে অসুস্থ ও বৃদ্ধ মানুষেরা সমস্যায় পড়েন। অভিযোগ, অনেক জায়গায় পুলিশের চোখের সামনেই নাগাড়ে শব্দবাজি ফাটানোর ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।

এ বছর করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় মানুষ আশঙ্কা করেছিলেন, শব্দবাজির তাণ্ডব বাড়বে। তবে বাস্তবে পরিবেশ ছিল সম্পূর্ণ অন্য রকম।

Advertisement

বিক্ষিপ্ত বাজি ফাটার আওয়াজ ছাড়া শব্দবাজির তাণ্ডব ছিল না বলে জানালেন অনেকেই। মানুষ নির্বিঘ্নে পথে বেরিয়েছেন। রাত জেগে মণ্ডপে ঘুরে নির্বিঘ্নে প্রতিমা দেখেছেন অনেকে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় ভিড় ছিল ভালই।

বনগাঁ মহকুমায় কী ভাবে শব্দবাজির রাশ টানা সম্ভব হল?

পুলিশ সুপার জয়িতা বসু বলেন, ‘‘কালীপুজোর আগের দিনগুলিতে থানাগুলি নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রির বিরুদ্ধে ধরপাকড় চালিয়েছিল। প্রচুর নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। অনেককে গ্রেফতার করা হয়। তা ছাড়া, পুলিশি নজরদারিও ছিল।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কালীপুজোর আগে গোপালনগর থানার পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে একটি গুদাম থেকে ২ কুইন্টাল শব্দবাজি আটক করেছিল। গ্রেফতার করা হয় এক বাজি বিক্রেতাকে। অভিযোগ, তিনি আতসবাজির আড়ালে নিষিদ্ধ শব্দবাজির কারবার চালাচ্ছিলেন। গাইঘাটা থানার পুলিশ প্রায় ১০০ কেজি শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছিল ৪ জনকে। বনগাঁ থানার পুলিশ লাগাতার তল্লাশি চালিয়ে ১০০ কেজি শব্দবাজি আটক করেছিল। বাগদা থানার পুলিশ ৩০ কেজি শব্দবাজি আটক করেছিল। গ্রেফতার করা হয়েছিল একজনকে।

বারাসত মহকুমার হাবড়া, অশোকনগর এবং গোবরডাঙা এলাকাতেও এ বার কালীপুজোয় শব্দবাজির তাণ্ডব ছিল না। হাবড়া শহরের বাসিন্দা, পেশায় আইনজীবী অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এবার শহরে লক্ষ্মীপুজোর রাতেও শব্দবাজি তাণ্ডব ছিল না। কালীপুজোও কেটেছে নির্বিঘ্নে। মানুষের সচেতনতা বেড়েছে বলেই মনে হচ্ছে। তা ছাড়া, পুলিশি ধরপাকড় ছিল।’’

হাবড়া থানার আইসি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লক্ষ্মীপুজোর আগে থেকে নিষিদ্ধ শব্দবাজি মজুত ও ফাটানোর বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালানো হয়েছিল। ২ কুইন্টাল ২৯ কেজি শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।’’ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, লক্ষ্মীপুজো ও কালীপুজোর রাতে এখানে শব্দবাজির তাণ্ডব থাকে।

শহরের বাসিন্দা পিনাকী কর বলেন, ‘‘এবার কালীপুজোয় শব্দবাজি কার্যত ফাটেনি হাবড়া শহরে।’’ অশোকনগর থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রায় ১৫০ কেজি শব্দবাজি আটক করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৯ জনকে। এর মধ্যে শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগে ধরা হয়েছিল ৩ জনকে। থানার পক্ষ থেকে মাইকে প্রচার করা হয়েছিল। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিকে নিয়ে বৈঠক করা হয়। আবেদন করা হয়েছিল, শব্দবাজি বিক্রি না করতে।

শহরের বাসিন্দা গুপি মজুমদার বলেন, ‘‘কালীপুজোয় এবার অশোকনগরে শব্দবাজির তাণ্ডব ছিল না।’’ গোবরডাঙা থানার পুলিশ ৩০০ কেজি শব্দবাজি আটক করেছিল। গ্রেফতার করেছিল ৪ জনকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন