Parliament Security Breach

সংসদ হানার মূলচক্রীর বন্ধু! পরিচয় জানাজানি হতেই এ রাজ্যে নীলাক্ষের বাড়িতে গেল পুলিশ

বুধবার দুপুরের সংসদ হানার ঘটনায় ললিত ঝা নামের এক জনকে হন্যে হয়ে খুঁজছে দিল্লি পুলিশ। নীলাক্ষ আইচ সেই ললিতেরই বন্ধু। তাঁর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:৪৬
Share:

পলাতক ললিত ঝায়ের (ইনসেটে) সঙ্গে বাংলার নীলাক্ষ আইচের যোগাযোগের খবর নিল পুলিশ। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

সংসদে হানার মূলচক্রী ভাবা হচ্ছে যাঁকে, সেই ললিত ঝা তাঁর ‘বন্ধু’। সেই বন্ধুত্ব এমনই যে, বুধবার সংসদ ভবনে ‘রংবাজি’র ঘটনার পর পরই তার ভিডিয়ো ললিত হোয়াট্‌সঅ্যাপে পাঠিয়েছিলেন তাঁকে। তিনি এই বাংলার বাসিন্দা। নাম নীলাক্ষ আইচ। বাড়ি হালিশহরে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে সংসদ হানার ঠিক ২৪ ঘণ্টা পর নীলাক্ষের বাড়িতে এল পুলিশবাহিনী। দুপুর ২টো নাগাদ ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কয়েক জন পুলিশকর্মী হালিশহরের জেটিয়ায় নীলাক্ষের বাড়িতে আসেন এবং বুধবারের সংসদ হানার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেন। সেই সঙ্গে ললিতের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কী রকম, কী ভাবেই বা আলাপ-পরিচয়, তা-ও নীলাক্ষকে জিজ্ঞাসা করেছে পুলিশ।

নীলাক্ষ বিধাননগর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তবে পড়াশোনার ফাঁকে সমাজসেবার কাজ করেন। তাঁর নিজের একটি এনজিও-ও আছে। পুলিশকে নীলাক্ষ জানিয়েছে, এই এনজিও-র সূত্রেই ললিতের সঙ্গে আলাপ তাঁর।

Advertisement

বুধবার দুপুরের সংসদ হানার ঘটনায় ললিতকে এখন হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। সংসদে হানার ঘটনায় যে পাঁচ জনকে দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করেছে, সূত্রের খবর, তাঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই ললিতের কথা জানতে পেরেছে তারা। এ-ও জেনেছে যে, ললিত কিছু দিন আগেও পশ্চিমবঙ্গে সমাজসেবামূলক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। একটি এনজিওর হয়ে কাজ করতেন তিনি। কলকাতাতে থাকতেনও।

এর পরেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশ্যে আসে ললিতের বন্ধু নীলাক্ষের নাম। জাতীয় স্তরের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়, নীলাক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, ললিত সংসদের ঘটনার ভিডিয়ো হোয়াট্‌সঅ্যাপ করেছিলেন তাঁকে।

বুধবার দুপুর ১টার কিছু পরেই সংসদে লোকসভা অধিবেশন চলাকালীন ‘রংবোমা’ নিয়ে হানা দেন দুই যুবক। গ্যালারির দর্শকাসন থেকে ‘তানাশাহি নেহি চলেগা’ বলে চিৎকার করে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাংসদদের টেবিলের উপর লাফ দিয়ে এগোতে থাকেন। ছুড়ে দেন হলুদ রঙের ধোঁয়া ছড়ানো বোমা। নীলাক্ষের কাছে এই ঘটনারই ভিডিয়ো রেকর্ডিং পৌঁছয় দুপুর ২টোর মধ্যে। সংবাদমাধ্যমকে নীলাক্ষ জানিয়েছিলেন, তিনি কলেজে থাকায় সেই সময়েই ভিডিয়ো দেখেননি। পরে দেখেন এবং ললিতের কাছে জানতেও চান কিসের প্রতিবাদে এমন করেছে তারা।

ললিতের সঙ্গে নীলাক্ষের এই যোগাযোগের কথা প্রকাশ্যে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ যায় নীলাক্ষের বাড়িতে। পুলিশকে নীলাক্ষ জানিয়েছেন, মাস কয়েক আগে খোলা তাঁর এনজিওতে যোগ দেওয়ার জন্য তিনিই অনুরোধ করেছিলেন ললিতকে। ললিত তাঁর সেই অনুরোধে সাড়াও দিয়েছিলেন। তার পর থেকেই একসঙ্গে কাজ করছেন তাঁরা।

নীলাক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি কি ললিতকে মুখোমুখি দেখেছেন? সামনাসামনি আলাপ হয়েছিল তাঁদের? জবাবে অস্পষ্ট ভাবে নীলাক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা একে অপরকে ব্যক্তিগত স্তরেই চিনতেন। মুখোমুখি আলাপও ছিল। তবে পুলিশের প্রশ্নের জবাব দিলেও সংবাদমাধ্যমকে নিজের মুখ দেখাননি নীলাক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন