বসিরহাটে ছবিটি তুলেছেন নির্মল বসু
টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন বসিরহাটের বেশ কিছু এলাকা। চাষের জমি জলের তলায় গিয়েছে। ভাসছে মেছোভেড়ি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েকটি এলাকায় জল থই থই করছে। তবে এমনটি হওয়ার কথা নয়। কারণ বসিরহাট শহরের পাশ দিয়ে বইছে ইছামতী নদী। পাঁচটি খাল দিয়ে জমা জল চলে যাওয়ার কথা ইছামতীতে। কিন্তু দিনের পর দিন ইছামতী সংস্কার হয় না। শুধু তাই নয়, ওই খালগুলির উপর বেআইনি ভাবে দোকান ও বাড়িও তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে অনেক জায়গায় খালগুলি প্রায় বুজে এসেছে। ফলে নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে।
পুরপ্রধান তপন সরকার বলেন, ‘‘নিজের নিজের এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতিতে কাউন্সিলরদের টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টির জন্য কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।’’
সাঁইপালা এলাকাতে বিভিন্ন রাস্তার উপরে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। এলাকার বহু বাড়ির মধ্যেও জল ঢুকে গিয়েছে। হরিশপুর, ভ্যাবলা, ছোট জিরাকপুর, ধলতিথা, দক্ষিণ বাগুণ্ডি-সহ বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সেখানেও এই একই অবস্থা।
জল জমার কারণে রাস্তায় পিচ উঠে গিয়ে গর্ত হয়ে গিয়েছে। যত্রতত্র ছড়িয়ে রয়েছে পাথর। জলের মধ্যে ওই রাস্তায় যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারা তো ওই রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে প্রায়ই পড়ে হাত পা কাটছেন। অসুবিধায় পড়েছেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। তাঁরা এখন একপ্রকার ঘরবন্দি।
বছরের পর বছর বর্ষার সময় এমন ভাবেই জল জমে। কিন্তু প্রশাসন থেকে এর কোনও স্থায়ী সমাধান করা হয় না বলে জানান এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, খালগুলির উপর যে বেআইনি দোকান বাড়ি তৈরি হয়েছে। তা উচ্ছেদ করার সাহস দেখাচ্ছে না প্রশাসন। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ‘‘দীর্ঘদিন আগেই কিছু রাজনৈতিক নেতার মদতে এই দোকানগুলি গড়ে উঠেছে। যা সরানো সমস্যার। তবু বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’
বসিরহাট স্টেশনের কাছে টাকি রাস্তার পাশে এসএন মজুমদার রোডের বড় অংশ এখন জলের তলায়। নিকাশি নালার নোংরা জলও মিশে গিয়েছে জমা জলের সঙ্গে। ওই জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। কল্পনা বন্দ্যোপাধ্যায়, খগেন মণ্ডল, রূপসা সাহা, কাকলি আঢ্য, রতন বৈদ্যরা বলেন, ‘‘ছোট থেকেই দেখছি শহরের নিকাশি ব্যবস্থা একই রকম। এর মধ্যে দিয়েই কর্মক্ষেত্রে যেতে হচ্ছে। নোংরা জল পেরিয়ে সন্ধ্যা বেলা বাড়ি ফিরতে বেশ ভয়ই লাগে।’’