অফিসে ঢুকে বিডিওকে নিগ্রহ সন্দেশখালিতে

বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে সন্দেশখালি ১ ব্লকে। বিডিও অচিন্ত্য মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘রাস্তার দাবিতে ছাত্রেরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল। হঠাৎ কিছু লোক অফিসে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ০২:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিডিও অফিসে ঢুকে তাণ্ডব চালাল কিছু লোক। বিডিওর মোবাইল কেড়ে নিয়ে ধাক্কাধাক্কি করা হয়। ভাঙচুর চলে অফিসে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে সন্দেশখালি ১ ব্লকে। বিডিও অচিন্ত্য মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘রাস্তার দাবিতে ছাত্রেরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল। হঠাৎ কিছু লোক অফিসে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। আমাকে থানায় ফোন করতে বাধা দেয়। পরে থানায় জানাই।’’ তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘোষপুর মডেলপাড়া থেকে অক্ষয় হাইস্কুল হয়ে বেদেমারি গ্রামের যাওয়ার রাস্তাটি কালীনগর পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ে। প্রায় ৮ কিলোমিটার ওই রাস্তা কিছুটা ইট ও মাটির ছিল। গত ১৫ মার্চ রাস্তাটি আমূল সংস্কারের পরিকল্পনা করা হয়। বরাদ্দ হয় ৪০ লক্ষ টাকা। দায়িত্ব দেওয়া হয় একটি ঠিকাদার সংস্থাকে। কাজও শুরু হয়। কিন্তু কয়েক দিন পরে ওই ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে চলে যান। তারপর থেকে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে বিক্ষোভ হয়েছে। বুধবার রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত কালীনগর পঞ্চায়েত প্রধান বিলাস হালদারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মানুষজন।

Advertisement

অক্ষয় হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব বসাক জানান, এ দিন গ্রামের কিছু লোক এসে স্কুলগেটে তালা দিয়ে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের একাংশকে নিয়ে বিডিও অফিসে যান। মারধরে কয়েকজন আহত হয়েছে। পড়ুয়াদেরও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাস্তা কবে সারানো হবে, তা নিয়ে কথা হচ্ছিল বিডিও-র সঙ্গে। অভিযোগ, সে সময়ে আচমকাই হাজির হয় কিছু লোক। তারা নিজেদের স্থানীয় স্কুলের অভিভাবক বলে পরিচয় দিয়ে হুজ্জুত শুরু করে। বিডিওকে কটূক্তি করা হয়। ভাঙচুর করা হয় ব্লক অফিসে। যে ছেলেমেয়েরা বিক্ষোভ দেখাতে এসেছিল, তাদের ধাক্কাধাক্কি করে সরিয়ে দেয়।

কিন্তু ‘অভিভাবক’ পরিচয় দিয়ে ব্লক অফিসে ঢুকল কারা?

এর পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত খুঁজে পাচ্ছেন দলেরই স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশ। জানা গিয়েছে, রাস্তার কাজ কারা করবে, তা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে বিবাদ চলছে। এ দিন যারা হামলা চালিয়েছে, তারা এক গোষ্ঠীর।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘ওখানে রাস্তা তৈরি নিয়ে একটা গোলমাল চলছে। এ দিন যারা হামলা চালিয়েছে, তারা যে দলেরই হোক, সরকারি দফতরে হামলা চালানোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, ‘‘রাস্তা হওয়া খুবই দরকার। সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েও কাজ শুরু হচ্ছে না। তাই মানুষ ক্ষুব্ধ।’’

কিন্তু শুরু হয়েও রাস্তার কাজ বন্ধ হল কেন? বিডিওর দাবি, ‘‘কাজ যখন শুরু হয়েছিল, সে সময়ে জিএসটি চালু হয়নি। জিএসটির পরে খরচ বেড়ে যায়। ফলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বাড়তি টাকা চেয়ে ঠিকাদারেরা কাজ বন্ধ রেখেছে।’’ খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাস্তা নিয়ে যে জট পাকিয়েছে, তার সমাধান করতে আগামী সোমবার জেলা পরিষদের একটি দল ওখানে যাবে। পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, বিডিওর সঙ্গে কথা বলে দ্রুত রাস্তা তৈরির জন্য পদক্ষেপ করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন