হতশ্রী: এ ভাবেই অবহেলায় পড়ে রোগীদের শয্যা। নিজস্ব চিত্র
অন্তর্বিভাগ শুরুর জন্য দু’বছর আগে তৈরি হয়েছিল নতুন ভবন। আনা হয়েছিল শয্যা। কিন্তু সিন্দ্রাণী পঞ্চায়েতের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহু প্রতীক্ষিত সেই অন্তর্বিভাগ শুরু হল না এখনও। এর ফলে সমস্যায় পড়েছেন ওই পঞ্চায়েতের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্বাধীনতার পরে স্থানীয় বাসিন্দা অবিনাশচন্দ্র নাথের দানের জমিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরি হয়েছিল। তখন এর উপরে আশপাশের কয়েকটি পঞ্চায়েতের মানুষ নির্ভরশীল ছিলেন। বহির্বিভাগ এবং অন্তর্বিভাগ— চালু ছিল দু’টিই। কিন্তু কয়েক দশক আগে অন্তর্বিভাগটি বন্ধ হয়ে যায়। বহির্বিভাগটি চালু থাকলেও সেখানে চিকিৎসকের সংখ্যা দিন দিন কমেছে।
বছর দুই আগে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে ‘আপগ্রেড’ করা হয়। তখন সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১০টি শয্যার অন্তর্বিভাগ চালু হবে।
সেখানে ২৪ ঘণ্টার জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন। স্বাভাবিক প্রসবের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো থাকবে। সেই অনুযায়ী, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নতুন ভবন তৈরি হয়। শয্যা আসে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও অন্তর্বিভাগ শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। এই বিষয়ে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তাঁরা।
ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, কোনও সীমানা পাঁচিল নেই। অন্তর্বিভাগের জন্য নতুন তৈরি হওয়া ভবনের দেওয়ালে শ্যাওলা ও ঝুল জমেছে। জলের পাইপ চুরি হয়ে গিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন দু’জন চিকিৎসক রয়েছেন। তাঁরা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রোগী দেখেন।
কিন্তু বিকেলের পর থেকে কোনও চিকিৎসক থাকেন না। তখন গোটা স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির ভরসা মহিলা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। তিনি জ্বর, পেট খারাপ, বমির ওষুধ দিয়ে দেন। তাতে কাজ না হলে রোগীকে ২০ কিলোমিটার দূরে বাগদা গ্রামীণ হাসপাতাল অথবা ৩৫ কিলোমিটার দূরে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।
কেন শুরু হচ্ছে না অন্তর্বিভাগ?
স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন দু’জন চিকিৎসক ছাড়া দু’জন নার্স, একজন ফার্মাসিস্ট, এবং দু’জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী রয়েছেন। কিন্তু অন্তর্বিভাগ চালুর জন্য আগে দরকার সর্বক্ষণের চিকিৎসক। এ ছাড়াও, ৪ জন সাফাই কর্মী চাই।
বাগদা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব মল্লিকের অবশ্য আশ্বাস, ‘‘লেবার রুমের আধুনিকীকরণ করে শীঘ্রই অন্তর্বিভাগে রোগী ভর্তি শুরু করা হবে। তখন সর্বক্ষণের চিকিৎসক থাকবেন।’’