সুনসান গ্রাম। থমথমে ভাব। গ্রামের বেশ কিছু যুবক এখনও গ্রামছাড়া। তার মধ্যেই খবর এল এলাকায় তৃণমূল প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। তবে খুব একটা উল্লাস করতে কাউকেই দেখা গেল না। গ্রামের মানুষের মুখে আতঙ্কের ছাপ। বৃহস্পতিবার বাদুড়িয়ার জগন্নাথপুর পঞ্চায়েতের শ্রীরামপুর গ্রামের চিত্র।
সোমবার এই গ্রামেই শ্রীরামপুর জুনিয়ার হাইস্কুলের ভোট দিতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হয়েছিলেন এক বৃদ্ধা গৌরীবালা সর্দার। তিনি এখনও চিকিৎসাধীন। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছিল। সে কথা অবশ্য মানেনি শাসক দল।
ঘটনার পরেই গ্রামের মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে তৃণমূল প্রার্থী রীতা মণ্ডলের বাড়ি ভাঙচুর করেন। ব্যালট বক্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। এরপরেই বিজেপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তৃণমূল। সেই থেকেই অনেকে গ্রাম ছাড়া।
এক গ্রামবাসী জানালেন, সে দিনের ঘটনা এখনও ভুলতে পারেননি মানুষ। তাই এত চুপচাপ। বিনা কারণে ওই বৃদ্ধার রক্তপাত হয়। তিনি এখনও হাসপাতালে। ভয়ে মানুষের মুখে তালা। এ প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে চাননি গৌরীবালাদেবীর পরিবারও। তাঁরা জানান, যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। ওই ব্যাপার নিয়ে বেশি নাড়াচাড়া করে কী হবে?
বাদুড়িয়া ব্লক তৃণমূল নেতা তুষার সিংহ বলেন, ‘‘কাউকে যদি মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়ে থাকে, তা হলে সেই ব্যক্তিকে আমার অনুরোধ, আপনি যে দলই করুন না কেন, আমার সঙ্গে দেখা করুন। না হলে ফোন করুন। আমরা আপনার দায়িত্ব নেব। গ্রামের কেউ ঘর ছাড়া থাকুক, তা আমরা চাই না।’’
জয়ী প্রার্থী তৃণমূলের রীতা বলেন, ‘‘বাদুড়িয়ায় তৃণমূল বিপুল জয়ের পরে বিরোধীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবে— এমনটা যদি কেউ মনে করে থাকেন, তা হলে তা ভুল। তেমন কোনও অভিযোগ পেলে দল থেকে ওই ব্যক্তিকেই আমরা তাড়িয়ে দেব।’’
গ্রামের মানুষের দাবি, যে ভাবেই হোক গ্রামে শান্তি ফিরুক। আর খুনোখুনি কেউ চান না কেউই।