বন্‌ধ পালন করতে বাজারে জোড়হস্ত অনুরোধ বামকর্মীদের      

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৫
Share:

আবেদন: বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

লাঠিহাতে চোখরাঙানি নয়, বরং জোড়হাতে অনুরোধ বাম কর্মী-সমর্থকদের।

Advertisement

মঙ্গলবার সকাল দশটা। যশোর রোড ধরে যাচ্ছে বন্‌ধ সমর্থকদের মিছিল। বাম কর্মীসমর্থকদের হাতে লাল পতাকা। মিছিল থেকে বেরিয়ে কর্মীরা ঢুকে পড়ছেন সড়কের পাশের দোকানগুলিতে। দোকানিদের কাছে গিয়ে হাতজোড় করে তাঁরা অনুরোধ করছেন দোকান বন্ধ রাখার জন্য। তাঁদের হাতে তুলেও দেওয়া হচ্ছিল বন্‌ধ সম্পর্কিত লিফলেট।

বামকর্মী সমর্থকেরা দোকান বন্ধ রাখতে হাতজোড় করে অনুরোধ করছেন, এমন ছবি দেখে দোকানিরা অনেকেই অবাক। এমন অভিজ্ঞতা তাঁদের অতীতে কখনও হয়নি। বাম আমলে বামকর্মীদের কাছ থেকে তাঁরা রুক্ষ তিক্ত ব্যবহারই পেয়েছেন। অনুরোধ শুনে বেশ কিছু দোকানি দোকান বন্ধ করে দিলেন। কেউ কেউ জানান, একটু পরে দোকান বন্ধ করছেন। এক দোকানি বলেন, ‘‘সিপিএম কর্মীরা এসে হাতজোড় করে অনুরোধ করছেন এমন অভিজ্ঞতা আগে কখন হয়নি। ওদের ব্যবহার সম্পূর্ণ পাল্টে গিয়েছে বলে মনে হল।’’ এক দোকানি বলেন, ‘‘ওঁদের অনুরোধ শুনে দোকান বন্ধ করবার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু উপায় ছিল না।’’

Advertisement

মহুয়া রায়চৌধুরী নামে এক বামকর্মী বলেন, ‘‘আমাদের অনুরোধ শুনে অনেক দোকানিই সাড়া দিয়েছেন। অনেকে আবার ভয়ে দোকান বন্ধ করতে পারেননি।’’

বছর আট আগেও বামেদের ডাকা বন্‌ধে বনগাঁর জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়াটা ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। দোকানপাট বন্ধ থাকত। যানবাহনহীন শুনশান রাস্তায় স্থানীয়দের ক্রিকেট খেলতেও দেখা যেত। সেসব এখন অতীত। বন্‌ধে তেমন সাড়া এ বারও দেখা যায়নি। বামেদের সাংগঠনিক শক্তি এ অঞ্চলে অনেকটাই কমেছে বলে দাবি স্থানীয়দের। কিছুটা হলেও বামেরা জনগণ থেকে বিছিন্ন। ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে বহু বাম কর্মী-সমর্থক শাসকদলে নাম লিখিয়েছেন। কিছু কর্মী সম্প্রতি বিজেপিতেও চলে গিয়েছেন। এ বারে তারা কোনও পঞ্চায়েতও দখল করতে পারেনি। বরং বিরোধী শক্তি হিসেবে তাদের জায়গায় উঠে এসেছে বিজেপি। মহকুমায় বিজেপি এ বার চারটি পঞ্চায়েত দখল করেছে।

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘‘কিছুটা হলেও আমরা জনগণ থেকে যে বিচ্ছিন্ন, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে এ বারের বন্‌ধে আগের চেয়ে অনেক বেশি ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছেন কর্মীরা। দু’মাস ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ বাড়ানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন