বর্জ্য থেকে তৈরি হবে বায়োগ্যাস

জমা আবর্জনা ও বর্জ্য পদার্থ থেকে তৈরি হবে বায়োগ্যাস। সেই গ্যাস থেকে উৎপন্ন হবে বিদ্যুৎ। সেই বিদ্যুতেই আলো জ্বলবে পুর এলাকায়। 

Advertisement

সমীরণ দাস

জয়নগর শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:২৭
Share:

—প্রতীকী ছবি

জমা আবর্জনা ও বর্জ্য পদার্থ থেকে তৈরি হবে বায়োগ্যাস। সেই গ্যাস থেকে উৎপন্ন হবে বিদ্যুৎ। সেই বিদ্যুতেই আলো জ্বলবে পুর এলাকায়।

Advertisement

এমনই চিন্তাভাবনা করছে জয়নগর-মজিলপুর পুরসভা। পুরপ্রধান সুজিত সরখেলের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের পুরসভাগুলির মধ্যে এমন উদ্যোগ এই প্রথম। জয়নগরের নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রমের অধীনস্থ বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনেলজির সঙ্গে যৌথ ভাবে এই বিদ্যুৎ প্রকল্প শুরু করতে চলেছে পুরসভা।

পুরসভা সূত্রের খবর, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজিতে আবেদনও জানানো হয়েছে। সেই আবেদনের ভিত্তিতে অনুমোদন এসে গিয়েছে। রাজ্য সরকারও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘প্রকল্পের খরচ প্রায় ১ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় সরকার একটি অনুদান পাঠিয়েছে। সেটা দিয়েই আপাতত কাজ শুরু হবে। বাকিটা রাজ্য সরকারের দেওয়ার কথা। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছেন। ওটা না এলে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারব না। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে রাজ্যের বুকে একটা দৃষ্টান্ত তৈরি হবে।’’

Advertisement

জয়নগরের শাহাজাদাপুরে একটি জায়গায় প্রায় ১২ বিঘা জমি রয়েছে পুরসভার। পুর এলাকার সমস্ত বর্জ্য সেখানেই জমা হয়। এই জমিতেই গড়ে উঠবে প্রকল্প। তৈরি হবে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট। উৎপন্ন গ্যাস থেকে পাওয়ার জেনারেশনের জন্য থাকবে জেনারেটর।

পুরপ্রধান জানান, জায়গাটিকে ‘এডুকেশন পার্ক অব রিসাইক্লিং’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে। সাধারণ মানুষ চাইলে কী ভাবে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে সেই প্রক্রিয়া দেখতেও পারবেন। যাঁরা এই জাতীয় বিষয় নিয়ে গবেষণা করেন, তাঁরা যাতে শিক্ষামূলক ভ্রমণের জন্য এখানে আসতে পারেন, সেই ব্যবস্থা হবে। গাছপালা বসিয়ে সুন্দর করে সাজানো হবে জায়গাটা। তৈরি হবে পার্ক। পুর এলাকার পাশাপাশি আশেপাশের পঞ্চায়েতগুলি থেকেও বর্জ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান পুরপ্রধান। এ বিষয়ে পঞ্চায়েত প্রধানদের অনুরোধ করা হবে বলে জানান তিনি।

এই প্রকল্প থেকে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব?

নিমপীঠ বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি সূত্রে জানা গিয়েছে, এক হাজার কেজি বর্জ্য থেকে ন্যূনতম ৪০-৪৫ কিউবিক মিটার বায়োগ্যাস উৎপন্ন করা সম্ভব। এ দিকে এক ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মোটামুটি এক কিউবিক মিটার বায়োগ্যস প্রয়োজন। অর্থাৎ, এক হাজার কেজি বর্জ্য থেকে প্রায় ৪০-৪৫ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছেন নিমপীঠ বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির সিনিয়র বিজ্ঞানী সলিলকুমার সাহু। শিবপুর বিই কলেজে সম্প্রতি বায়োগ্যাস তৈরির একটি প্রকল্পেও যুক্ত ছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘প্রাথমিক ভাবে জয়নগরের এই প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ স্থানীয় স্কুলগুলির কাজে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে। পরবর্তী কালে তা এলাকাতেও সরবরাহ করা হবে।’’ কাজ শুরু হওয়ার মাসখানেকের মধ্যেই এই প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব বলে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন