Shantanu Thakur

বাইরে চেঁচামেচি করে লাভ নেই, দলীয় বিধায়ককে বার্তা শান্তনুর

শান্তনুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে অসীমের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সাংসদ কী বলেছেন আমি শুনিনি। তাই কোনও মন্তব্য করব না।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৫৯
Share:

বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। —ফাইল চিত্র।

বনগাঁয় বিজেপির অভ্যন্তরে কোন্দল নানা ঘটনায় প্রকাশ্যে এসেছে সাম্প্রতিক সময়ে। এ বার দলের হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানালেন বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর।

Advertisement

শনিবার শান্তনু গাইঘাটার চাঁদপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে একটি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার উদ্বোধন করতে এসেছিলেন। সেখানে অসীমের উদ্দেশ্যে নাম না করে শান্তনুর বার্তা, ‘‘তাঁর কোনও সমস্যা থাকলে দলের ভিতরে বলা দরকার। বাইরে চেঁচামেচি করে কোনও লাভ নেই।’’

দুর্গাপুজোর আগে থেকেই বনগাঁ বিজেপি কার্যত দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। এক দিকে আছেন শান্তনু ঠাকুর, বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডলেরা। অন্য দিকে অসীম সরকার, বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়ারা। দুই গোষ্ঠীকে পৃথক কর্মসূচি নিতে দেখা যাচ্ছে বার বারই।

Advertisement

দিন কয়েক আগে বাগদার হেলেঞ্চায় দলের উদ্বাস্তু সেলের সভায় অসীম মন্তব্য করেছিলেন, কোনও ধর্মীয় সংগঠনের কার্ড কখনও নাগরিকত্বের প্রমাণ হতে পারে না। সেখানে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, মতুয়া কার্ড নিয়ে ভারতবর্ষে যে কোনও জায়গায় নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করা যাবে, এ কথা যদি কেউ বলে থাকেন তিনি ভুল বক্তব্য দিয়েছেন। কারণ, মতুয়া কার্ড একটি ধর্মীয় সংগঠনের কার্ড হতে পারে, হিন্দুত্বের প্রমাণ হতে পারে, কিন্তু সেটি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। মতুয়া কার্ড নিয়ে যদি কেউ বাইরের রাজ্যে গিয়ে বিদেশি বলে ধরা পড়েন, তা হলে মতুয়া কার্ড দেখিয়ে স্বদেশি বলে বিবেচিত হবেন না। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড দেখাতে হবে।

দিন কয়েক আগে গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র (টেনি) মতুয়াদের জানিয়েছিলেন, অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের পক্ষ থেকে সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুরের দেওয়া কার্ড নিয়ে দেশের যে কোনও জায়গায় যাতায়াত করা যাবে। অসীম বলেন, ‘‘কোনও বাংলাদেশিকে মতুয়া-কার্ড করে দেওয়া হল। ওই কার্ড সহ জিআরপি তাঁকে ধরলে তা দেখে ছেড়ে দেবে, এটা কখনও হতে পারে না। এই মিথ্যা কথা আমি বলতে পারব না।’’ অসীমের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে শান্তনুকে প্রশ্ন করা হলে এ দিন তিনি বলেন, ‘‘কে (অসীম) কী বলেছেন কানে আসেনি। যদি বলে থাকেন, তা হলে তিনি সিস্টেম জানেন না। বিষয়বস্তু জানেন না। বাইরে হাঁকডাক করে বেড়াচ্ছেন। একটা নিয়ম (প্রোটোকল) আছে। সেই প্রোটোকলে দলের মধ্যে আলোচনা করা দরকার। বাইরে হাঁ-হু করলে কেউ শুনবে না। কাজ হবে না।’’

রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, এ দিনের শান্তনুর মন্তব্য অসীমের প্রতি ক্ষোভেরই প্রকাশ। শান্তনু সিএএ (সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন) প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ঠাকুরবাড়িতে এসে বলে গিয়েছেন, ৩০ মার্চের মধ্যে সিএএ-এর রুল তৈরি হয়ে যাবে। তারপরেই কার্যকর হবে। মন্ত্রীরা যা বলেছেন, তারপর আমার আর বক্তব্য দেওয়া সঠিক নয়।’’ শান্তনুর মতে, মতুয়ারা ৭০ বছর ধরে নিরাশ। তাঁরা নাগরিকত্ব পাননি। এখন মতুয়ারা আনন্দিত, নাগরিকত্ব আইন হয়েছে। কার্যকর হওয়াটাই বাকি। কার্যকর হবেই।

শান্তনুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে অসীমের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সাংসদ কী বলেছেন আমি শুনিনি। তাই কোনও মন্তব্য করব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন