জেটির ভাঙাচোরা হাল নিয়ে ক্ষোভ

বেতনি নদীতে মিলল নিখোঁজ যুবকের দেহ 

সন্দেশখালি ১ ব্লকের ন্যাজাটের এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় মানুষজন। ন্যাজাট বাজার কমিটির সম্পাদক সনৎ মণ্ডল জানান, দীর্ঘ দিন ধরে মেরামতির অভাবে ন্যাজাট ফেরিঘাটে কংক্রিটের জেটির অবস্থা ভয়ানক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০২:২৬
Share:

বিপজ্জনক: এই ঘাট দুলে উঠেই বেসামাল হয়ে তলিয়ে যান যুবক। নিজস্ব চিত্র

দিন তিনেক আগে টলমলে কংক্রিটের জেটি দিয়ে নৌকোয় উঠতে গিয়ে জলে পড়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন এক যুবক। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে নদীতে তাঁর দেহ মেলে। যুবকের পরিচয় জানা যায়নি।

Advertisement

সন্দেশখালি ১ ব্লকের ন্যাজাটের এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় মানুষজন। ন্যাজাট বাজার কমিটির সম্পাদক সনৎ মণ্ডল জানান, দীর্ঘ দিন ধরে মেরামতির অভাবে ন্যাজাট ফেরিঘাটে কংক্রিটের জেটির অবস্থা ভয়ানক। ফাটল ধরেছে। যাত্রী বেশি উঠলে জেটি দুলে ওঠে। যে কোনও সময়ে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে। সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে জানিয়েও সুরাহা হচ্ছে না।

সুন্দরবন অঞ্চলের মধ্যে পড়ে সন্দেশখালি ১ ব্লক। ওই ব্লকের ন্যাজাট এবং কালীনগরের মধ্যে বেতনি নদী। সেখান দিয়ে প্রতিদিন নৌকোয় পারাপার করেন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। ন্যাজাট বাজার থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সন্দেশখালি ১-২ ব্লক, হিঙ্গলগঞ্জে নিয়ে আসেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও মালপত্র নিয়ে যাওয়া হয়। বাম আমলে বেতনির উপরে সেতুর পরিকল্পনা হয়েছিল। কিন্তু এখন তা বিশ বাঁও জলে। ফলে নৌকোই মানুষের ভরসা।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার সন্ধ্যায় ন্যাজাট থেকে নৌকোয় ওঠার সময়ে জেটি নড়ে ওঠায় টাল সামলাতে না পেরে জলে পড়ে যান ওই যুবক। নৌকোর মাঝি জলে ঝাঁপ দেন। কিন্তু তাঁকে খুঁজে পাননি। জলের স্রোতে ভেসে যান যুবক। এ দিন ওই যুবকের দেহ ন্যাজাট এলাকায় ভাসতে দেখে উদ্ধার করা হয়। ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারণ মানুষ। তাঁদের বক্তব্য, নদী পারাপারের জন্য চারটি জেটি আছে। সব ক’টিই বেহাল। নৌকোয় মাল তোলার জন্য স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী এবং মুটে-মজুরদের বানানো বাঁশের জেটির অবস্থাও শোচনীয়।

স্থানীয় মানুষজন জানালেন, জেলা পরিষদের জলপথ ও পরিবহণ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী কংক্রিটের সেতু বানিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। চার বছর হতে চলল, সেটি হয়নি।’’ নারায়ণের বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি সেচ দফতরের দায়িত্ব। তাঁরাই ব্যবস্থা করবেন।’’ সংশ্লিষ্ট দফতরের কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে বসিরহাটের মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ন্যাজাট বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সেচমন্ত্রী থাকাকালীন ন্যাজাটে এসে যাত্রী পারাপারের কংক্রিটের সেতুটি মেরামতের কথা বললেও তা কার্যকর হয়নি। ন্যাজাট এবং কালীনগরে কলেজ, স্কুল, ব্লক, পঞ্চায়েত, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর, হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ড, ব্যাঙ্ক, থানা রয়েছে। সেখানে বহু মানুষ যাতায়াত করেন জলপথে। যাতায়াত করে বহু কচিকাঁচারাও। যে কোনও সময়ে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আতঙ্কে সিঁটিয়ে থাকেন সকলেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন