বার বার কন্যাসন্তান কেন, লাঞ্ছিতা বধূ

সরকারি তরফে প্রচার যতই থাক, গাঁয়ে-গঞ্জে কন্যাসন্তান জন্মানোয় তাকে কতটা সাদরে গ্রহণ করা হয়, সেই প্রশ্ন ফের উঠে গেল বসিরহাট মহকুমার দু’টি পৃথক ঘটনায়।

Advertisement

নির্মল বসু

বসিরহাট শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৩
Share:

সরকারি তরফে প্রচার যতই থাক, গাঁয়ে-গঞ্জে কন্যাসন্তান জন্মানোয় তাকে কতটা সাদরে গ্রহণ করা হয়, সেই প্রশ্ন ফের উঠে গেল বসিরহাট মহকুমার দু’টি পৃথক ঘটনায়।

Advertisement

মেয়ে হওয়ায় এক মাকে ঝাঁটা-পেটা করে বাড়ি থেকে তাড়াল শ্বশুরবাড়ির লোকজন। অন্য দিকে, সদ্যোজাত মেয়েকে ক্লিনিকেই ফেলে পালাল বাবা-মা।

প্রথম ঘটনাটি বসিরহাটের পিফাঁ গ্রামের। অন্যটি স্বরূপনগরের হঠাৎগঞ্জ বাজার এলাকার।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর আটেক আগে বসিরহাটের পিঁফা গ্রামের পুঁটেন সর্দারের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল খিদিরপুর গ্রামের ফুলিয়ারা বিবির। গোল বাধে ফুলিয়ারা কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায়। মেয়ে হওয়ার দায় ফুলিয়ারার উপরে চাপিয়ে শুরু হয় অত্যাচার। এরই মধ্যে দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ওই মহিলা। এ বারও মেয়ে জন্মায়। মাস দেড়েক আগে তৃতীয় কন্যাসন্তান তানিয়ার জন্ম দেন ফুলিয়ারা। অভিযোগ, অসুস্থ ফুলিয়ারাকে মারধর করে পুঁটেন। শনিবার সকালে অত্যাচার চরমে ওঠে। ঝাঁটাপেটা করে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয় ফুলিয়ারাকে। মাঝের সন্তানটি দু’বছর বয়সে জলে ডুবে মারা গিয়েছিল। এ বার স্বামীর অত্যাচারে দুই মেয়েকে নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন ফুলিয়ারা। পুলিশ পুঁটেনকে জানিয়ে দিয়েছে, স্ত্রী-সন্তানদের সসম্মানে ঘরে না তুললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফুলিয়ারাকে আপাতত ভর্তি করা হয়েছে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে। স্বরূপনগরের হঠাৎগঞ্জের বাসিন্দা দম্পতির এক কন্যাসন্তান আছে। মহিলা ফের গর্ভবতী হয়ে পড়লে বাড়ির কাছে একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয় তাঁকে। শুক্রবার সেখানেই আরও এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। পুলিশ জানায়, শিশুকে নিতে অস্বীকার করে ওই দম্পতি। তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ক্লিনিকের মালিক থানায় ফোন করেন। পুলিশ দম্পত্তির বাড়িতে গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্যকে সামনে রেখে বোঝানো হয়, শিশুকে এ ভাবে ফেলে গেলে বাবা-মায়ের কী পরিণতি হতে পারে। ওই দম্পত্তির বক্তব্য ছিল, দু’টি মেয়েকে মানুষ করা তাঁদের সম্ভব নয়। তবে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে দ্বিতীয় সন্তানকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে সম্মত হন তাঁরা। পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে, শিশু কিংবা মায়ের উপরে কোনও রকম অত্যাচারের অভিযোগ পেলে স্বামীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন