বিপদ মাথায় ভাঙা জেটি দিয়েই চলে পারাপার

দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ার ফলে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির জটা ও কুলতলির দেবীপুরের জেটি ঘাট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়দিঘি শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৬ ০২:১৬
Share:

এ ভাবেই চলছে পারাপার। ছবি: নিজস্ব চিত্র।

দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ার ফলে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির জটা ও কুলতলির দেবীপুরের জেটি ঘাট।

Advertisement

দুটি ঘাটেই রেলিং নেই। ঠাকুরান নদীতে ভাটা পড়লে প্রায় ৫০ ফুট হাঁটু সমান কাদা মাড়িয়ে ভুটভুটিতে উঠতে হয়। ভাটার পর পাকা জেটি ঘাটের উপর কাদার পলি জমে পিচ্ছিল হয়ে যায়। এর মধ্যে পারাপার করাই মুশকিল। একটু বেসামাল হলে সলিল সমাধি। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ওই জেটি ঘাট দিয়ে মানুষকে পারাপার করতে হয়।

রায়দিঘি বাজার থেকে জটা ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। ওই রাস্তা ধরেই জেটি ঘাটে পৌঁছতে হয়। খানা খন্দে ভরা রাস্তা দিয়ে জেটি ঘাটে যেতেই মানুষ নাজেহাল হয়ে যায়।

Advertisement

একই অবস্থা দেবীপুর ঘাটের। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ভুটভুটিতে চলে পারাপার। দুই ঘাটেই নেই আলো। সন্ধ্যার সময় যাত্রীদের এখানে প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ পরিচালিত ওই দুই ঘাটের মধ্যে দেবীপুর ঘাটের কাছে কোনও পানীয় জল, শৌচাগার বা ভাল যাত্রী শেডের নেই। আবার জটার ঘাটে যাত্রী শেড থাকলেও সেটি খুব ছোট।

ওই দুই ঘাটে প্রায় ১ কিলোমিটার চওড়া ওই নদী পারাপার করে কুলতলির ভুবনেশ্বরী, মৈপিঠ, দেউলবাড়ি, কাটামারি-সহ ২০ থেকে ২৫টি গ্রামের মানুষ রায়দিঘি বা ডায়মন্ড হারবারে আসে। অসুস্থ মানুষের পক্ষে ওই জেটিঘাট পারাপার হওয়া খুবই মুশকিল। ভুটভুটিতে কোনও ছাউনি নেই। বর্ষায় ভিজতে হয়। আর গ্রীষ্মের সময় চড়া রোদে বসতে হয় যাত্রীদের।

কুলতলি ও মথুরাপুর ২ ব্লকের প্রায় ৬ হাজার মানুষ ওই ফেরিঘাট দিয়ে পারাপার করে। তার মধ্যে আবার ওই ভুটভুটি চালকদের শংসাপত্র নেই। এর জন্য কারও কোনও মাথাব্যথা নেই। ফলে মাঝে মধ্যে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে পারাপার চলে। এতে যে কোনও মুহুর্তে বিপদ ঘটতে পারে।

নিত্যযাত্রী মুকেশ মুদি বলেন, ‘‘কোনও নিয়মকানুন না মেনেই ভুটভুটি পারাপার চলে। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে পারাপার হয়। বিপদের আশঙ্কা নিয়েই যাতায়াত করতে হয়।’’ রাতে অসুস্থ রোগী নিয়ে যেতে হলে মাঝিরা ইচ্ছে মতো টাকা চায় বলে অভিযোগ।

কুলতলির বিধায়ক রামশঙ্কর হালদার সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওই ফেরিঘাটের পরিবর্তে নদীর উপর সেতুর দাবি উঠেছে বহুবার। রাজ্যে সরকারের কাছে সেতু নির্মাণের দাবি তোলা হয়েছিল। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেতু নির্মাণ করার মত আমার ফান্ড নেই।’’ জেলা পরিষদ সূত্রে জানানো হয়েছে, ঘাট দুটির কী অবস্থা তা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন