কিছু যাত্রীর সঙ্গে ঝামেলা বন্ধ বাস চলাচল

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক (আরটিও) অশোক ঘোষ বলেন, ‘‘বাস চলাচলের সমস্যা নিয়ে আমাকে জানিয়েছিল। তবে ওই রুটে বাস বন্ধ রয়েছে, সেটা কেউ জানায়নি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাস কর্মচারীর সঙ্গে কিছু যাত্রীর বচসার জেরে গত কয়েক দিন ধরে বন্ধ বাস চলাচল।

Advertisement

ডায়মন্ড হারবার থেকে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর ও রায়দিঘি পর্যন্ত এসডি-১৮ রুটের বাস বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন যাত্রীরা। বিষয়টি সব মহলেই জানানো হয়েছে। তবু বাস চালানোর বিষয়ে কেউ কিছু করছে না বলে অভিযোগ যাত্রীদের।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক (আরটিও) অশোক ঘোষ বলেন, ‘‘বাস চলাচলের সমস্যা নিয়ে আমাকে জানিয়েছিল। তবে ওই রুটে বাস বন্ধ রয়েছে, সেটা কেউ জানায়নি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০০ সাল থেকে মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর মোড় থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত এসডি-১৮ রুটের বাস চলাচল শুরু হয়। পরে ওই রুটটি বাড়িয়ে রায়দিঘি পর্যন্ত করা হয়। মন্দিরবাজার থেকে অনেকেই ওই বাসে কলকাতায় গিয়ে জিনিসপত্র ফেরি করেন। তাঁদের জন্য বাম জমানায় বাস ভাড়া ১৯ টাকা করে ধার্য করা হয়েছিল। এলাকার প্রায় ৩০০ হকার এই সুবিধা পেতেন। তাঁদের পরিচয়পত্রও বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

ওই যাত্রীদের সঙ্গেই গোলমাল বাধে বা কর্মীদের।

বাস দেরি করে ছাড়া হচ্ছিল বলে যাত্রীদের ওই অংশটি অভিযোগ তোলে। ফলে তাঁরা ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারছিলেন না। হকারদের বক্তব্য, দেরি করে কলকাতায় পৌঁছে আর ব্যবসা হচ্ছিল না। কিছু দিন আগে ছোটপোল মোড়ে বাস আটকে দেন ওই হকার-যাত্রীরা। বাস কর্মীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি বেধে যায়। তারপরেই বাস ইউনিয়ন ও বাস মালিক পক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, ডায়মন্ড হারবার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত বাস চলাচল করবে। দক্ষিণ বিষ্ণুপুর বা রায়দিঘি যাবে না।

ডায়মন্ড হারবার থেকে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার অংশে এবং রায়দিঘি পর্যন্ত অন্য ছোট বাস চলে। কিন্তু তা সংখ্যায় কম। ফলে মাঝপথ থেকে যাত্রীরা উঠতেই পারছেন না। তা ছাড়া, ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে রোগী নিয়ে ওই এলাকা থেকে আসেন অনেকে। বাস না চলায় সমস্যায় পড়েছেন তাঁরাও। ভোগান্তি হচ্ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদেরও। শুধু তাই নয়, ওই বাসস্ট্যান্ডে ছ’জন কর্মচারী ছিলেন। তাঁদের মালিক পক্ষ থেকেই বেতন দেওয়া হত। বাস না চলায় তাঁদের বেতনও বন্ধ।

মন্দিরবাজার এলাকার বাসিন্দা আব্বাস মোল্লা, তৈমুর গাজিদের বলেন, ‘‘আমরা কম ভাড়ায় কলকাতায় যাই, সেটা কেউ মেনে নিতে পারছে না। নানা অজুহাত দেখিয়ে বাস বন্ধ রেখেছে। আমরা কম ভাড়ায় যাই বলে বাসের কর্মচারীরা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এ বিষয়ে আমরা স্থানীয় বিধায়ক থেকে প্রশাসনের সব মহলে জানিয়েছি।’’

বাস মালিক ইউনিয়নের সম্পাদক বাপ্পা হালদারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। আইএনটিটিইউসি এসডি-১৮ বাস শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি আশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দিনে দিনে ভাড়া বাড়ছে। সাধারণ যাত্রীদের ভাড়া ৬৫ টাকা। ওঁরা দেন ১৯ টাকা। ওই হকার-যাত্রীরাই অন্য যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। তা ছাড়া, বড় বড় টিভি, টেবিল ফ্যান নিয়ে বাসে ওঠায় অন্য যাত্রীদের অসুবিধা হয়।’’ তবু সব পক্ষকে নিয়ে বসে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন