সিপিএম প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল তৃণমূল। তদন্তের দাবিতে টানা তিনদিন ধরে মথুরাপুর ২ ব্লকের নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের গেটের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন শাসকদলের নেতারা।
এর জেরে প্রধান-সহ পঞ্চায়েতের অন্য সদস্যরা অফিসে ঢুকতে পারছেন না। পঞ্চায়েতের সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ থাকায় ভুগতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
ওই পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধান রাজকৃষ্ণ বৈরাগী বলেন, ‘‘মঙ্গলবার দুর্নীতির অভিযোগে বিডিও আমাকে একটা নোটিসও ধরিয়েছেন। আমি তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করব।’’
পঞ্চায়েতের কাজ বন্ধ হওয়ায় মিলছে না জন্ম, মৃত্যুর শংসাপত্র। জমির মিউটেশনও বন্ধ রয়েছে। তা ছাড়া সরকারি শৌচাগার নির্মাণ, ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। এলাকায় ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের ২০ লক্ষ টাকা বাকি। ওই টাকা নিতে এসে শ্রমিকদের খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মথুরাপুর ২ ব্লকের রায়দিঘি বিধানসভা কেন্দ্রে ১১টি পঞ্চায়েতের মধ্যে সিপিএমের দখলে রয়েছে ৯টি পঞ্চায়েত। নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতটি আগে তৃণমূলের দখলে ছিল। ২০১৩ সালের নির্বাচনে এই পঞ্চায়েত বামেদের দখলে চলে আসে। মথুরাপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতি এবং অধিকাংশ পঞ্চায়েত সিপিএমের অধীনে থাকায় উন্নয়নের টাকা নিয়ে সমস্যা চলছিল। সরকারি সাহায্য ঠিকমতো মিলছিল না বলে সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলি অনেকটা পিছিয়ে পড়েছিল বলে পঞ্চায়েত সূত্রে খবর।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই ওই পঞ্চায়েত এলাকায় উন্নয়নের কাজ বন্ধ ছিল। অভিযোগ, ভোটের ফলাফলের পর থেকে সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলিতে তৃণমূলের হুমকি ও শাসানি চলছে। শুধু তাই নয়, সিপিএমের অধীনে থাকা পঞ্চায়েতগুলি শাসকদল নানা কৌশলে দখল নেওয়ারও চেষ্টা করছে। ওই এলাকার সিপিএম নেতা ইয়াসিন গাজি বলেন, ‘‘আমাদের দলের প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ এনে অবস্থান বিক্ষোভ চালাচ্ছে শাসকদলের নেতারা। ওদের আসল উদ্দেশ্য হল পঞ্চায়েতের দখল নেওয়া।’’
পঞ্চায়েত প্রধানের অনুমতি না নিয়ে গেটের সামনে প্যান্ডেল করে অবস্থান বিক্ষোভ করছে শাসকদল। বিষয়টি বিডিওকে একাধিকবার বলা হয়েছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিডিওর মদতেই শাসকদল এমনটা করার সাহস পাচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ।
এ বিষয়ে মথুরাপুর ২ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি প্রদ্যোৎ প্রামাণিক বলেন, ‘‘প্রধানের নানা দুর্নীতি মানুষকে জানাতেই এই আন্দোলন।’’ তবে প্রধানকে অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে তিনি জানান।
বিডিও মোনালিসা তিরকে বলেন, ‘‘ওই পঞ্চায়েত নিয়ে তদন্ত চলছে। কোনও দল নয় স্থানীয় মানুষ প্রধানকে অফিসে ঢুকতে দিচ্ছেন না। এ ভাবে বেশিদিন চলতে থাকলে পঞ্চায়েতের সমস্ত কাজ বিডিও অফিস থেকেই করা হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’