জঞ্জালে ঢাকছে খাল, ছড়াচ্ছে দূষণ

আগে ভাসতো বজরা, এখন খালে ভাসে জঞ্জাল!একসময় নদী পথে বাণিজ্য চলত ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। গঙ্গা থেকে জনপদের ভিতরে ঢুকে যাওয়া বেশ কয়েকটি খাল আছে এই শিল্পাঞ্চলে যেগুলি দিয়ে বাণিজ্যের জিনিস নিয়ে নৌকো বা বজরা গঙ্গায় গিয়ে পড়ত।

Advertisement

বিতান ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৬
Share:

আগে ভাসতো বজরা, এখন খালে ভাসে জঞ্জাল!

Advertisement

একসময় নদী পথে বাণিজ্য চলত ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। গঙ্গা থেকে জনপদের ভিতরে ঢুকে যাওয়া বেশ কয়েকটি খাল আছে এই শিল্পাঞ্চলে যেগুলি দিয়ে বাণিজ্যের জিনিস নিয়ে নৌকো বা বজরা গঙ্গায় গিয়ে পড়ত। ইছাপুর খাল তেমনই একটি। বছর কয়েক আগে এই খালের দু’ধারে বিস্তীর্ণ চাষ জমি ছিল। কিন্তু জনবসতি বাড়ছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। চাষ জমিতে বসতি গড়ে উঠেছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে।

খাল পাড়ের এই বসতির বেশিরভাগটাই কলোনির মতো করে গড়ে ওঠা। অপরিকল্পিত এই বসতির বাসিন্দারও পরিবেশ নিয়ে সচেতন নন, সচেতনতা আনতে পারেনি পুরসভাও। উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ১ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গা বেয়ে যাওয়া এই খাল এখন কোথাও কোথাও নালায় পরিণত হয়েছে। আবর্জনার পাহাড় জমতে জমতে খাল বুজতে শুরু করেছে। পরিবেশ দূষণ হচ্ছে দেদার। বেআইনি দখলদারদের মধ্যে সেই জায়গা নিয়ে কাড়াকাড়িও চলছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সুস্থ পরিবেশের ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে খাল বোজানোয় মদত রয়েছে পুরসভারও। কারণ, খালে জঞ্জাল ফেলা নিয়ে পুরসভা বাধা দেয়নি। তা ছাড়া পুরসভার কর্মীরাই গাড়ি নিয়ে এসে নিত্যদিন এলাকার জঞ্জাল ওই খালে ফেলে দূষণ বাড়িয়েছেন। খালের বেশ কিছু জায়গায় জল দেখা যায় না। জলের বদলে শুধুই জঞ্জাল ভাসতে দেখা যাচ্ছে।

Advertisement

ব্যারাকপুরে দীর্ঘদিন ধরে বন্য প্রাণ ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন পেশায় আইনজীবী কুশল মিশ্র। কুশলবাবু জানান, ইছাপুর খালপাড় বরাবর আগে অনেক গাছ ছিল। নানা রকম পাখির দেখা মিলত। বসতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছ কমেছে। তার সঙ্গে আবর্জনার দূষণ আর খাল সংস্কার না হওয়ার ফলে এখন অনেকটা এলাকা এতটাই নোংরা যে কাক আর শকুন ছাড়া অন্য কোনও পাখি দেখা যায় না। তাঁর কথায়, ‘‘পুরসভার অনেক আগেই এই বিষয়ে সদর্থক ভাবনা ভাবা উচিৎ ছিল।’’ খালপাড়ের বাসিন্দা মহুয়া সরকার, সবিতা ঘোষ, সুধীর দাসদের অভিযোগ, ‘‘ময়লা জমিয়ে রাখা হয় খালপাড়ে। তা থেকে রোগ ছড়ায় এলাকায়। নোংরা খালের জলে মশার আঁতুড় ঘর। অসুখ নিয়েই বেঁচে থাকা আমাদের।’’ উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার পক্ষ থেকে অবশ্য খালের অপরিচ্ছন্নতা এবং দুরবস্থার কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। পুরপ্রধান মলয় ঘোষ বলেন, ‘‘৮কোটি ৪২লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে খাল সংস্কারের জন্য। আবর্জনা সাফ করে ইছাপুর খালের নাব্যতা ফেরানো হবে।’’ এরপর ওই খালের দু’পাশে উদ্যান তৈরি করা হবে। যা পর্যটনের জন্য আকর্ষণীয় হবে বলে তিনি জানান।

তবে এখন বাসিন্দাদের অপেক্ষা ইছাপুর খালের শাপমুক্তি কবে থেকে শুরু হয় তার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement