‘উধাও’ ১১ কাউন্সিলর, পুলিশের দ্বারস্থ পুরপ্রধান 

সম্প্রতি বনগাঁ পুরসভার ১৪ জন তৃণমূল কাউন্সিলর দু’দফায় পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে মহকুমাশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০৫:৩১
Share:

বনগাঁ পুরসভা। ফাইল চিত্র।

পুরপ্রধানের দাবি, এগারো জন কাউন্সিলর উধাও। কাজে আসছেন না। বাড়িতেও পাওয়া যাচ্ছে না তাঁদের। কাউন্সিলরদের ফিরিয়ে আনতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন পুরপ্রধান।

Advertisement

যাঁদের নিয়ে পুরপ্রধানের এ হেন ‘উদ্বেগ’, তাঁরা অবশ্য সে কথা জানতে পেরেই হাজির। তবে সশরীরে নয়। এলেন ফেসবুক লাইভে। সেখানে তাঁরা জানিয়েছেন, কই, উধাও হয়ে তো যাননি! দিব্যি আছেন বহাল তবিয়তেই।

সম্প্রতি বনগাঁ পুরসভার ১৪ জন তৃণমূল কাউন্সিলর দু’দফায় পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে মহকুমাশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছেন। প্রথম দফায় ১১ জন, দ্বিতীয় দফায় ৩ জন কাউন্সিলর চিঠি দেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, এরপর থেকেই ওই কাউন্সিলরদের বেশিরভাগকেই এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, দফতরেও যাচ্ছেন না তাঁরা। বাড়িতেও থাকছেন না।

Advertisement

পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে পুরপ্রধান দাবি করেছেন, ১১ জন কাউন্সিলরকে নিয়েও এই সমস্যা হচ্ছে। মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে পাচ্ছে না। দেখা না পেয়ে পুরসভায় ভিড় করছেন। ওই কাউন্সিলরেরা পুরসভার বিভিন্ন দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁরা পুরসভায় না আসায় উন্নয়নের কাজে সমস্যা হচ্ছে। পুলিশের কাছে পুরপ্রধানের আবেদন, ‘‘দ্রুত ওই কাউন্সিলরদের শারীরিক ভাবে পুরসভায় আনার ব্যবস্থা করা হোক।’’ কাউন্সিলরদের ‘উধাও’ হয়ে যাওয়ার পিছনে কারও কারও ভূমিকাও দেখতে পাচ্ছেন শঙ্কর। ওই ‘অনৈতিক কাজে’ যাঁরা যুক্ত, তদন্ত করে তাঁদের খুঁজে বের করার জন্য পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েছেন পুরপ্রধান।

বনগাঁর পুলিশ সুপার জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে সাংবাদিক সম্মেলনও করেন শঙ্কর। সেখানে বলেন, ‘‘আমাদের এক নেতার ঘেরাটোপে রয়েছেন কাউন্সিলররা। বনগাঁয় কোনও বোমা-গুলি চলে না। শান্ত পরিবেশে তা হলে কেন কাউন্সিলররা এলাকায় থাকছেন না?’’

পুরপ্রধানের ওই দাবির পরে শুক্রবার দুপুরেই অবশ্য অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ১২ জন কাউন্সিলরকে দেখা গেল ফেসবুক লাইভে। এক কাউন্সিলর সেখানে বলেন, ‘‘পুরপ্রধান কী উদ্দেশে এ সব কথা বলছেন বুঝতে পারছি না। ১২ জুন বারাসতে জেলা তৃণমূল সভাপতি-সহ জেলা নেতৃত্বের উপস্থিতিতে বৈঠক করেছি। সেখানে পুরপ্রধানও ছিলেন। তা হলে উধাও হয়ে গেলাম কী করে? আমরা নিয়মিত বাড়ি যাচ্ছি। বনগাঁ থেকে কলকাতায় যাতায়াত করছি।’’

মনোতোষ নাথ নামে এক বিদ্রোহী কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘পুরসভার শেষ বোর্ড মিটিংয়ে আমরা উপস্থিত ছিলাম। এর মধ্যে আর কোনও বোর্ড মিটিং হয়নি। তা হলে উন্নয়ন কী ভাবে থমকে থাকার প্রশ্ন আসছে?’’

তৃণমূলের একটি সূত্র অবশ্য জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে পুরসভার কাজ থেকে খানিকটা সরেই আছেন এই কাউন্সিলররা। অস্বস্তি এবং বিতর্ক এড়াতে পুরপ্রধানের মুখোমুখিও হতে চাইছেন না। অনাস্থার উপরে ভোটাভুটির আগে পর্যন্ত কার্যত অন্তরালেই থাকতে চান তাঁরা। এক কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘আত্মগোপন করে থাকার প্রশ্ন নেই। পালিয়েও বেড়াচ্ছি না। মানুষ প্রয়োজনে আমাদের পাশেই পাবেন।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন