রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের পরীক্ষায় দেদার টুকলি

ক্লাসে পৌঁছল গোল্লা পাকানো ছেঁড়া কাগজ

এ বার রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও টুকলির বাড়বাড়ন্ত দেখা গেল গাইঘাটার ঠাকুরনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৮ ০২:১৮
Share:

নজর-এড়িয়ে: এ ভাবেই পৌঁছে দেওয়া হয় কাগজ। ঠাকুরনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় টোকাটুকি প্রতি বছরই কোথাও কোথাও সামনে আসে। পুলিশ-প্রশাসন, স্কুল কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে বাইরে থেকে টুকলি ক্লাসে পৌঁছে দেওয়া, গোল্লা পাকানো কাগজে উত্তর লিখে জানলা গলিয়ে ভিতরে ফেলার জন্য বহু স্কুলে বাইরে রীতিমতো জমায়েত থাকে— এমন দৃশ্যও বহু বার সামনে এসেছে।

Advertisement

এ বার রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও টুকলির বাড়বাড়ন্ত দেখা গেল গাইঘাটার ঠাকুরনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

শনিবার সকাল তখন সাড়ে ১১টা। স্কুলের খেলার মাঠের পাশে চোখে পড়ল, এক যুবক একতলার একটি জানলার কার্নিসে উঠে পড়েছেন। দোতলার জানলা দিয়ে কাউকে টুকলির কাগজ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। স্কুলের শৌচাগারের পিছনের জানলার পাশে একদল যুবকের ভিড়। ভিতরে শৌচাগারের জানলার একাংশ ভাঙা। সেখানে দুই মহিলা এসে দাঁড়িয়েছেন। যুবকেরা বাইরে থেকে জানলা দিয়ে টুকলি দিচ্ছেন। এক প্রৌঢ়াকেও দেখা গেল, ঘরের জানলা গলিয়ে কারও হাতে টুকলি পৌঁছে দিচ্ছেন।

Advertisement

সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। আগে থেকেই বাইরের মাঠে বেশ কিছু যুবক ও মহিলার জটলা ছিল। তাদের হাতে ছিল খাতার ছেঁড়া পৃষ্ঠা, বইয়ের পাতা। অভিযোগ, পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকেই ওই সব টুকলি ভিতরে পাচার করা হচ্ছিল।

যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ক্লাসে টুকলি পৌঁছলেও কেউ সে সব দেখে লেখার সুযোগ পায়নি। প্রধান শিক্ষক অজিতেশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘শিক্ষিক-শিক্ষিকারা পরীক্ষা ঘর থেকে বেশ কিছু টুকলি উদ্ধার করেছেন ঠিকই। বাইরে থেকে সে সব ভিতরে ছুড়ে ফেলা হয়েছিল। সে সব বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ভিতরে কাউকে টুকলি করতে দেওয়া হয়নি।’’ তবে সোমবার থেকে পরীক্ষায় যাতে স্কুলের বাইরে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়, সে বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধান শিক্ষক। স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক সুরজিৎ বিশ্বাস জানিয়েছেন, গোটা বিষয় সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

এ দিন স্কুলে নিরাপত্তার জন্য সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশ মোতায়েন ছিল। অভিযোগ, তাদের তোয়াক্কা না করেই টুকলি সরবরাহের চেষ্টা হয়েছে। পুলিশের দাবি, টুকলি দেওয়া হচ্ছে দেখতে পেয়েই তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গাইঘাটার সিআই পার্থ সান্যাল বলেন, ‘‘সোমবার থেকে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন