করোনা আক্রান্ত চাইল্ড লাইনের কর্মী
Coronavirus in West Bengal

অফিস খুলতে বাধা দিলেন গ্রামবাসীরা

রাজ্য সরকারের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের আওতায় থাকা চাইল্ড লাইন এলাকায় নারীপাচার, বাল্যবিবাহ বন্ধ-সহ শিশুদের নিয়ে নানা কাজ করে।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২০ ০৩:৪৮
Share:

অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে চাইল্ডলাইনের কর্মীরা।

এক কর্মী করোনা আক্রান্ত হওয়ায় চাইল্ড লাইনের অফিস খুলতে বাধা দিলেন এলাকার মানুষ। ক্যানিংয়ের সঞ্জয়পল্লি গ্রামের ঘটনা। গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে বিপাকে পড়েছেন অফিসের অন্য কর্মীরা। কার্যত বন্ধ রয়েছে কাজকর্ম। কর্মীদের তরফে ক্যানিং থানা ও ক্যানিং মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

Advertisement

রাজ্য সরকারের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের আওতায় থাকা চাইল্ড লাইন এলাকায় নারীপাচার, বাল্যবিবাহ বন্ধ-সহ শিশুদের নিয়ে নানা কাজ করে। পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে এই সংস্থা। লকডাউন চলাকালীন ক্যানিং মহকুমায় অন্তত দশটি নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করেছে চাইল্ড লাইন। আর তা করতে গিয়েই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ক্যানিং চাইল্ড লাইনের এক কর্মী। বৃহস্পতিবার তাঁর করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তাঁকে ক্যানিং ২ ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের তৈরি সেফ হোমে পাঠানো হয়। চাইল্ড লাইনের অফিস স্যানিটাইজ়ও করা হয়। কিন্তু চাইল্ড লাইনের কর্মীর আক্রান্ত হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই বিপত্তি বাধে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সঞ্জয়পল্লি গ্রামের কিছু মানুষ সেই অফিসের সামনে এসে বিক্ষোভ দেখান। দ্রুত অফিস বন্ধ করতে বলেন তাঁরা। লকডাউন ও করোনা সংক্রমণের জেরে কিছু কর্মী অফিসে থেকেই কাজ করছিলেন। তাঁদেরও অফিসের বাইরে বেরোতে বারণ করা হয়। কথা না শুনলে অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।

শুক্রবার সকালেও চাইল্ড লাইনের কর্মীরা অফিস খুলতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ বাধে। খবর পেয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা মাতলা ১ পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি কমলাকান্ত সাহা ঘটনাস্থলে যান। অফিস জীবাণুমুক্ত করে দেন। পাশাপাশি গ্রামবাসীদের সচেতন করে কর্মীদের অফিস খুলতে নির্দেশ দেন।

Advertisement

চাইল্ড লাইনের কর্মী দীপঙ্কর মিদ্যা ও বান্টি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমাজের জন্য কাজ করতে গিয়েই আমাদের এক কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা তাঁকে সেফ হাউস রেখে এসেছি। অফিস জীবাণুমুক্ত করেছি। তবুও এলাকার মানুষ আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন। কাজে বাধা দিচ্ছেন। আমাদের প্রকল্প সরকারি জরুরি পরিষেবার অঙ্গ। এটি বন্ধ হলে অনেক সমস্যা বাড়বে।’’

অভিযোগ, স্থানীয় শিক্ষক শ্যামপদ গায়েন গ্রামবাসীদের একত্রিত করে চাইল্ড লাইনের এই অফিস বন্ধ করতে উদ্যত হয়েছেন। একজন শিক্ষক হয়ে কী ভাবে তিনি এমমন কাজ করছেন, তা ভেবে অবাক দফতরের কর্মীরা। শ্যামপদ বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামে যাতে করোনা না ছড়ায়, সে কারণেই ওদের অফিস বন্ধ রাখতে বলেছি। সরকারি নির্দেশ জানা আছে। কিন্তু এটা জনবহুল এলাকা। এখানে করোনা রোগীরা ঘোরাঘুরি করলে এলাকায় সংক্রমণ ছড়াবে। তাই গ্রামের সকলে মিলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

ক্যানিং ১ বিডিও নীলাদ্রিশেখর দে বলেন, “চাইল্ড লাইন জরুরি পরিষেবার অঙ্গ। কোনও ভাবেই এই অফিস বন্ধ করা যাবে না। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে গোটা এলাকাকে জীবাণুমুক্ত করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন