পুর-যন্ত্রণার বনগাঁ

ক্রমশ প্রতিবাদে সরব হচ্ছেন বাসিন্দারা। সোমবার সকালে ত্রিকোণ পার্ক এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা মিছিল করেন।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯ ০০:২৬
Share:

প্রতিবাদ: বনগাঁ শহরের অচলাবস্থা কাটানোর দাবিতে মিছিল। সমস্ত ছবিগুলি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক

দিনের পর দিন ভোগান্তি বেড়েই চলেছে বনগাঁ পুর এলাকার বাসিন্দাদের। বেতন বৃদ্ধি ও স্থায়ীকরণের দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন বনগাঁ পুরসভার অস্থায়ী কর্মীরা। তার জেরেই স্তব্ধ নাগরিক পরিষেবা।

Advertisement

ক্রমশ প্রতিবাদে সরব হচ্ছেন বাসিন্দারা। সোমবার সকালে ত্রিকোণ পার্ক এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা মিছিল করেন। শহর পরিক্রমা করে মিছিল যায় মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায়ের দফতরে। সেখানে বনগাঁ সাব ডিডিভিশন্যাল চেম্বার অব কর্মাসের তরফে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ব্যবসায়ীরা দ্রুত শহরকে আবর্জনা মুক্ত করার আবেদন করা হয়। বহু মানুষের কথায়, ‘‘আমরা নিয়মিত পুরকর দিই। তা হলে আমাদের কেন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে হবে।’’

চেম্বার অব কর্মাসের সম্পাদক বিনয় সিংহ বলেন, ‘‘অস্থায়ী কর্মীদের দাবির সঙ্গে আমরা সহমত। তবে পিছন থেকে আন্দোলন করতে কেউ বা কারা মদত দিচ্ছেন। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত নাগরিক পরিষেবা স্বাভাবিক করতে পদক্ষেপ করুক।’’

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমাশাসক গোটা বিষয়টি উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসককে জানিয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গেও মহকুমাশাসক কথা বলেছেন। কাকলি বলেন, ‘‘পরিষেবা চালু করার জন্য পুরসভার সরকারি আধিকারিক ও সরকারি কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

সোমবার দুপুরে পুরসভার সামনে অস্থায়ী কর্মীরা মাইক বেঁধে আন্দোলন শুরু করেছেন। ২৫ জুন থেকে কাজকর্ম বন্ধ রেখেছেন। এক
সাফাই কর্মী বললেন, ‘‘আমাদের কাছে এসে এখনও পর্যন্ত কেউ আশ্বাস দেননি। মানুষের অসুবিধা হচ্ছে
জানি। তবে আমরাও তো বহু বছর
ধরে বঞ্চিত।’’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, পুরসভার গাড়ি সকালে বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করতে আসছে না। কোথাও বিদ্যুতের ভ্যাপার ও আলো কেটে গেলে ঠিক করা হচ্ছে না। পুরকর্মীরা ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন না। পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্বাস্থ্যদ্বীপে নিয়মিত চিকিৎসক আসছেন না। ডেঙ্গি মোকাবিলায় মশা মারার তেল স্প্রে, বন জঙ্গল সাফাই বন্ধ। পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলিতে অস্থায়ী কর্মীরা পড়াচ্ছেন না। পঠনপাঠনও ব্যাহত হচ্ছে। দিনেরবেলায় রাস্তার আলো জ্বলে থাকছে। নেভানোর লোক মিলছে না। লোকসভা ভোটে বনগাঁ শহরে তৃণমূলের ভরাডুবি ও পুরসভার ১২ জন তৃণমূল কাউন্সিলর সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ওই কাউন্সিলররা পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থাও এনেছেন। দলত্যাগী এক কাউন্সিলরের বক্তব্য, ‘‘ইচ্ছাকৃত ভাবে পুরপ্রধান অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছেন।’’

পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘অস্থায়ী কর্মীদের বেতন ৭ হাজার ২০০ টাকা করে হওয়া উচিত। কিন্তু পুরসভার আর্থিক পরিস্থিতি যা তাতে ওই বেতন দেওয়া সম্ভব ছিল না। তবুও বনগাঁর মানুষের স্বার্থে অস্থায়ী কর্মীরা কাজ করছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ডামাডোলের কারণে তাঁরা নিজেদের সুরক্ষিত মনে করছেন না বলেই আন্দোলন করছেন। মঙ্গলবার সকলের সঙ্গে আলোচনা করব সমস্যা মেটাতে চেষ্টা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন