Ayodhya Ram Mandir Inauguration

তুঙ্গে প্রদীপের চাহিদা, লক্ষ্মীলাভ পালপাড়ার

বারাসত ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত এই পালপাড়া এলাকা। যশোর রোডের দু’ধার ধরে একশোরও বেশি বাড়িতে বছরভর মাটির জিনিসপত্র তৈরি হয়।

Advertisement

ঋষি চক্রবর্তী

দত্তপুকুর শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:০৭
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অযোধ্যায় আজ রামমন্দিরের উদ্বোধন। দেশ জুড়ে ঘরে ঘরে প্রদীপ জ্বালানোর আবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই কারণে মাটির প্রদীপের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। লক্ষ্মীলাভ হয়েছে দত্তপুকুরের পালপাড়ার বাসিন্দাদের।

Advertisement

মাটির জিনিস তৈরির জন্য বিখ্যাত পালপাড়া। এখনকার মৃৎশিল্পীরা জানান, গত কয়েকদিনে প্রদীপ বিক্রি হয়েছে হু হু করে। পাশাপাশি রাম, সীতা, হনুমানের মূর্তির বিক্রিও বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। এখানকার তৈরি প্রদীপ, রাম-সীতার মূর্তি গিয়েছে রাজ্যের বাইরেও। সব মিলিয়ে রামমন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে গত কয়েকদিনে এক কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে বলে দাবি মৃৎশিল্পীদের।

বারাসত ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত এই পালপাড়া এলাকা। যশোর রোডের দু’ধার ধরে একশোরও বেশি বাড়িতে বছরভর মাটির জিনিসপত্র তৈরি হয়। এখানকার তৈরি দেব-দেবীর মূর্তি, মাটির প্রদীপ, ঘর সাজানোর জিনিসপত্র রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, এমনকি, ভিন্ রাজ্যেও যায়। সাধারণত বিভিন্ন পুজো, দীপাবলির মরসুমেই মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। তবে, এ বার রামমন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে কার্যত দীপাবলির ব্যস্ততা ফিরে এসেছে বলেই জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

মৃৎশিল্পীরা জানান, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মহারাষ্ট্র, গুজরাত-সহ বেশ কিছু রাজ্যের ব্যবসায়ীদের থেকে প্রদীপের বরাত এসেছে এ বার। প্রদীপ ছাড়াও রাম, সীতা, হনুমানের মূর্তি ও ধ্বজাও কিনেছেন তাঁরা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও লোকজন এসে প্রদীপ কিনে নিয়ে গিয়েছেন। রামমন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে এত মাটির প্রদীপ বিক্রি হবে, তা ভাবতেই পারেননি তাঁরা। ফলে, আরও চাহিদা থাকলেও শেষ পর্যন্ত অনেকেই তৈরি করে উঠতে পারেননি।

রবিবার পালপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, অনেকেই এসে প্রদীপের খোঁজ করছেন। না পেয়ে ফিরেও যাচ্ছেন। পালপাড়ার মৃৎশিল্পী শ্যামল পাল বলেন, “আগে বুঝতে পারলে সময় নিয়ে কাজ শুরু করা যেত। কিন্তু এখন প্রচুর বরাত আসছে। হাতে সময় কম, তার উপর আবহাওয়াও ভাল নয়। তাই সময়ে প্রদীপ দেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানিয়ে দিচ্ছি।” আর এক শিল্পী সন্তোষ পাল বলেন, “দু’সপ্তাহ আগে দশ হাজার মাটির প্রদীপের বরাত দিতে এসেছিলেন এক ব্যক্তি। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই, বরাত নেওয়া সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়ে ফিরিয়ে দিতে হয়েছে তাঁকে।”

মৃৎশিল্পীরা জানান, যে হারে গত কয়েক দিনে প্রদীপ এবং রাম-সীতার মূর্তি বিক্রি হয়েছে, তা ভাবা যায় না। পালপাড়ার বাসিন্দা রুনা পালের কথায়, “সাধারণত এই অসময়ে বিক্রিবাটা সে ভাবে হয় না। কিন্তু এ বার প্রদীপ বিক্রিতে আমাদের সংসারের হাল ফিরল।”

রামমন্দিরের সঙ্গে ইতিমধ্যেই নাম জড়িয়েছে দত্তপুকুরের। এখানকার বাসিন্দা মহম্মদ জামালউদ্দিন ছেলেকে নিয়ে অযোধ্যার নতুন মন্দিরের জন্য দু'টি রামের মূর্তি বানিয়েছেন। দত্তপুকুরের আর এক শিল্পী সৌরভ রায় কাজ করেছেন মন্দির তৈরিতে। মৃৎশিল্পীরা মনে করছেন, এ বার পালপাড়ার নামও পৌঁছে গেল ওই রাজ্যে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন