নদী থেকে উদ্ধার কলেজ ছাত্রীর দেহ

শেষ বারের মতো তরুণীকে দেখা গিয়েছিল হুগলির মগরায় ঈশ্বরগুপ্ত সেতুর উপরে। হলুদ রঙের মোটর বাইকে বসা এক যুবকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি চলছিল তাঁর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:০৯
Share:

মৃত মৌ। নিজস্ব চিত্র।

শেষ বারের মতো তরুণীকে দেখা গিয়েছিল হুগলির মগরায় ঈশ্বরগুপ্ত সেতুর উপরে। হলুদ রঙের মোটর বাইকে বসা এক যুবকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি চলছিল তাঁর।

Advertisement

১৭ তারিখ বিকেলে ওই ঘটনার পর থেকে আর খোঁজ মিলছিল না নৈহাটির ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র কলেজের ছাত্রী মৌ সরকারের (২০)। প্রেমিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল আগে। গ্রেফতারও হন জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী নামে কল্যাণীর বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওই ছাত্র। তাঁর সঙ্গে মৌয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। ওই যুবকের সঙ্গেই ১৭ তারিখ বিকেলে শেষবারের মতো দেখা গিয়েছিল মৌকে। মঙ্গলবার নোয়াপাড়ার পোস্ট অফিস ঘাটের কাছ থেকে পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়েছে ওই তরুণীর। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান অজয় ঠাকুর বলেন, ‘‘ওই ছাত্রীর দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলেই স্পষ্ট হবে, কী ভাবে মৃত্যু ঘটেছিল।’’

উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুরের কাঁপা ধানকল এলাকার বাসিন্দা মৌ ১৭ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন সকালের দিকে। কলেজে যান। পুলিশ জানতে পেরেছে, বিকেলে এক বান্ধবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার পরে মৌ দেখা করেন জ্যোতির্ময়ের সঙ্গে। মগরার দিকে নদিয়ার সঙ্গে সংযোগকারী ঈশ্বরগুপ্ত সেতু থেকে গঙ্গায় এক তরুণী ঝাঁপ দিয়েছে বলে জানতে পারে হুগলি জেলা পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পেরে, ওই তরুণী ছিলেন মৌ।

Advertisement

ধৃত জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী।

মেয়ে রাতে না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন আত্মীয়-পরিজনেরা। রাতে বীজপুর থানায় নিখোঁজের ডায়েরি হয়। পর দিন মৌয়ের এক বান্ধবীর কাছ থেকে জ্যোতির্ময়ের সঙ্গে মোটরবাইকে চেপে যাওয়ার কথা জানতে পারেন পরিবারের লোকজন। পাশের গ্রাম রামকৃষ্ণ কলোনিতে যান ওই ছাত্রীর বাবা বিষ্ণুপদ সরকার। জ্যোতির্ময়ের বাড়িতে খোঁজ করে জানতে পারেন, তিনি এক আত্মীয়ের উপনয়ন উপলক্ষে মেদিনীপুরে গিয়েছেন। সেখানে জ্যোতির্ময়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তিনি অসুস্থ বলে জানিয়ে দেন আত্মীয়রা। ১৯ ফেব্রুয়ারি জ্যোতির্ময় ফিরলেও তাঁর বাড়ির লোকেরা বিষ্ণুপদবাবুদের দেখা করতে দেননি বলে অভিযোগ। ওই রাতেই মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন বিষ্ণুপদবাবু। গ্রেফতার হন জ্যোতির্ময়। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোনও তথ্য মেলেনি ওই যুবকের কাছ থেকে। এ দিকে বিষ্ণুপদবাবু বলেন, ‘‘প্রথমে এত লুকোচুরি দেখে ভেবেছিলাম, হয় তো পালিয়ে বিয়ে করেছে মেয়েটা। ছেলেটাও লজ্জায় বলতে চাইছে না। কিন্তু এখন তো মনে হচ্ছে অন্য ঘটনা।’’ বিষ্ণুপদবাবুর অভিযোগ, মেয়েকে জ্যোতির্ময়ই সেতুর উপর থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল নদীতে। জ্যোতির্ময়ের পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। বাড়ি দরজায় তালা দেওয়া ছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement