রান্না চলছে। ছবি: শান্তনু হালদার।
পাশাপাশি মাটিতে খুঁড়ে উনুন তৈরি করেছেন ওঁরা। তাতে কড়াই চাপিয়ে চলছে নিরামিষ নানা পদের রান্না। কোনও মুসলিম বোন রান্না করে খাওয়াচ্ছেন হিন্দু দিদিদের। কোথাও হিন্দু কাকিমা-দিদিমারা পঞ্চ ব্যাঞ্জন দিয়ে থালা সাজিয়ে দিচ্ছেন মুসলিম ভাই-বোনের সামনে।
প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসে অমাবস্যার পর প্রথম সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার হাবরার ফুলতলা এলাকার মণ্ডলপাড়া গ্রাম এমন ভাবেই মেতে ওঠে রান্না উৎসবে। যা এখানে এক সম্প্রীতির উৎসব। এ বছরও ছিল উৎসেবর আয়োজন। দুই সম্প্রদায়ের প্রায় তিনশোটি পরিবার নিজেরা রান্না করে খেয়েছেন। গ্রামের বাসিন্দা শ্যামাপ্রসাদ মণ্ডল জানান, বহু বছর আগে এলাকায় কলেরা দেখা দিয়েছিল। তাতে বহু মনুষ মারা যান। বহু মানুষ গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। শোনা যায়, সেই সময় এক মুসলিম মহিলা স্বপ্নাদিষ্ট হন স্থানীয় একটি পুকুরের জল দিয়ে যদি গ্রামের দুই সম্প্রদায়ের মানুষ রান্না করে খায় তা হলে সব ঠিক হয়ে যাবে। সেই থেকেই শুরু এই রান্না পুজো তথা উৎসবের। রান্না শেষে চলে কলার পাতার পাত পেতে পেট পুরে ভোজন। ভোজনের পর বাড়তি পাওনা সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুকুরটির নাম ধনিরামের পুকুর। পুকুরটি গ্রামের মানুষই রক্ষণাবেক্ষণ করেন। স্থানীয় বাসিন্দা ফতিমা বিবি বলেন, ‘‘আজ এই পুজো হিন্দু-মুসলমানের মিলনের উৎসবে পরিণত হয়েছে।’’