নতুন পুলিশ জেলা বনগাঁ, কটাক্ষ বিরোধীদের

কোন কোন থানা নিয়ে বনগাঁ পুলিশ জেলা গঠিত হচ্ছে,  পরিকাঠামো কতটা বাড়ছে, পুলিশ সুপারের অফিস কোথায় হবে—  এ সব প্রশ্ন নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। বুধবার জেলা পুলিশ প্রশাসনের কর্তারাও এ সম্পর্কে কিছু জানাতে পরেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৯ ০১:৪০
Share:

প্রতীকী ছবি।

রাজ্যের নতুন পুলিশ জেলা হিসাবে বনগাঁর নাম ঘোষণা করা হল। মঙ্গলবার নবান্ন থেকে সরকারি ভাবে এই ঘোষণা করা হয়।

Advertisement

বনগাঁ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার হিসাবে তরুণ হালদারের নামও বলা হয়েছে। যদিও কোন কোন থানা নিয়ে বনগাঁ পুলিশ জেলা গঠিত হচ্ছে, পরিকাঠামো কতটা বাড়ছে, পুলিশ সুপারের অফিস কোথায় হবে— এ সব প্রশ্ন নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। বুধবার জেলা পুলিশ প্রশাসনের কর্তারাও এ সম্পর্কে কিছু জানাতে পরেননি।

প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘বনগাঁ, বাগদা, গাইঘাটা ও গোপালনগর, পেট্রাপোল ও বনগাঁ মহিলা পুলিশ থানা নিয়ে নতুন পুলিশ জেলা হচ্ছে। সম্ভবত রাজ্যের মধ্যে বনগাঁ সব থেকে ছোট পুলিশ জেলা হতে চলেছে।’’

Advertisement

এ দিকে বনগাঁকে পুলিশ জেলা হিসাবে ঘোষণার পরেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলেই মনে করছে। বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বিপর্যয়ের ইঙ্গিত পেয়ে এখন বাঁচার চেষ্টা করছেন। পুলিশই এখন তৃণমূলের রক্ষাকর্তা। সাধারণ মানুষ তৃণমূলের পাশে নেই সেটা ওরা বুঝতে পারছেন।’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘‘হঠাৎ কেন বনগাঁ পুলিশ জেলা হিসাবে ঘোষণা হল, তা এক কথায় বলা সম্ভব নয়। তবে এর পিছনে ভোটের ফলাফল একটা কারণ। আমরা চাইব, পুলিশ নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করবে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সঠিক পদক্ষেপ করবে।’’

তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য এর সঙ্গে ভোটের ফলাফলের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করা হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, অনেক দিন আগে থেকে সরকারি স্তরে বনগাঁকে পুলিশ জেলা হিসাবে তৈরির প্রক্রিয়া চলছিল। এ বার তা কার্যকর হল। জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘বনগাঁ সীমান্তবর্তী এলাকা। অপরাধমূলক কাজ হওয়ার সম্ভবনা থাকে। বারাসত থেকে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। এ বার বনগাঁয় পুলিশ লাইন তৈরি হবে, এসপি অফিস হবে। এখানে বসেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা সহজ হবে।’’

তবে বনগাঁয় বিষয়টি এখনও অনেকেই জানেন না। বনগাঁবাসীর বক্তব্য, এটা খুবই ভাল খবর। এতদিন নানা প্রয়োজনে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে বারাসত যেতে হত। যাতে সময়ও নষ্ট হত। টাকাও খরচ হত। এখন হাতের কাছে পুলিশ কর্তাদের পাওয়া গেলে বিপদে সরাসরি কথা বলার সুযোগ হবে।

কয়েকজন জানালেন, ‘‘অনেক সময় দেখা যায় স্থানীয় থানা অভিযোগ নিতে চায় না। পুলিশ কর্মীরা মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এ সব এ বার বন্ধ হলে আমরা উপকৃত হব।’’ রাতে পুলিশি নজরদারি বাড়লে, যাতায়াত নির্ভয়ে করা যাবে। এক পুলিশ কর্মীর কথায়, ‘‘ক্রাইম কনফারেন্সগুলো বনগাঁতে হওয়াতে যাতায়াত সমস্যা কমবে। বারাসত যেতে হলে একটা দিন আমাদের নষ্ট হত। তখন কোনও ঘটনা ঘটলে ফিরতে দেরি হয়ে যেত। এখন থেকে সেই সমস্যা আর হবে না।’’ পুলিশ যেন রাজনৈতিক মদতপুষ্ঠ হয়ে কাজ না করেন—দাবি সাধারণ মানুষের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন