COVID-19

চৈত্র সেলে উধাও করোনা বিধি

কোনও জায়গাতেই ক্রেতা-বিক্রেতারা মাস্ক পরছেন না। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা!

Advertisement

দিলীপ নস্কর ও নির্মাল্য প্রামাণিক

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২১ ০৬:০০
Share:

ফাইল চিত্র।

রাস্তার দু'পাশে ফুটপাত জুড়ে বসে গিয়েছে সারি সারি দোকান৷ বিক্রি হচ্ছে জামাকাপড়, জুতো থেকে শুরু করে থালাবাটি, ঘর সাজানোর সরঞ্জাম, বাচ্চাদের খেলনা আরও কত কী! সেলের বাজারে সস্তায় জিনিস কিনতে ক্রেতার ভিড়ও চোখে পড়ার মতো।

Advertisement

গত বছর লকডাউনে পুরোপুরি মার খেয়েছিল ব্যবসা। তবে এ বার কেনাবেচা জমে উঠলেও ভি়ড়ের মধ্যে করোনা-সচেতনতার নামগন্ধ চোখে পড়ছে না। এ দিকে, প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণ। এক দিকে রাজনৈতিক মিটিং-মিছিল, অন্য দিকে, চৈত্র সেলের কেনাকাটায় স্বাস্থ্যবিধিভঙ্গ ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের।

বনগাঁয় রাখালদাস সেতু থেকে বাটার মোড় পর্যন্ত যশোর রোডের দু'পাশে জমে উঠেছে চৈত্র সেলের বাজার। বনগাঁ খেলাঘর ময়দানেও গোটা মাস ধরে চলেছে চৈত্রমেলা৷ সেখানেও রকমারি পসরা সাজিয়ে বসে গিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ডায়মন্ড হারবারের স্টেশন বাজারে সেলের কেনাকাটাতেও দেখা গেল একই দৃশ্য৷ যদিও কোনও জায়গাতেই ক্রেতা-বিক্রেতারা মাস্ক পরছেন না। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা!

Advertisement

সেলের বাজারে জামাকাপড়ের দোকান দিয়েছেন বনগাঁর লিটন দেবনাথ৷ বললেন, ‘‘গত এক বছর ঘরে বসে জমানো পুঁজি ভেঙে সংসার চালাতে হয়েছে৷ এ বছর ব্যবসা শুরু করতে পারলেও বিক্রি প্রায় অর্ধেকে নেমে গিয়েছে৷’’ একই কথা জানালেন ডায়মন্ড হারবারের স্টেশন বাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী গোপাল নিয়োগী। তিনি বলেন, ‘‘আগের তুলনায় ব্যবসা বেড়েছে। তবে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে সময় লাগবে৷’’ হায়দার গাজি নামে আর এক ব্যবসায়ীর মতে, লকডাউনের সময়ে অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। অনেকের হাতে টাকা নেই।

নেতড়া গ্রামের সাইফুদ্দিন স্ত্রী আলেমা বিবিকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন সেলের বাজারে কেনাকাটায়। সাইফুদ্দিন বলেন, “পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করি। কিন্ত লকডাউনের পরে কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এখন বাড়িতে প্রায় বেকার বসে রয়েছি। সেলের বাজারে একটু কম দামে কেনাকাটা করতে এসেছি৷’’

এঁদের কারও মুখেই মাস্ক ছিল না৷ প্রশ্ন করায় জানালেন, এ দিকে এখন তেমন করোনা নেই। তাই মাস্ক পরেননি৷ এক তরুণী গৃহবধূ আবার বলেন, ‘‘বিভিন্ন মিছিল ও রাজনৈতিক সভায়ও তো প্রচুর জনসমাগম হচ্ছে৷ সেখানেও কেউ মাস্ক পরছেন না৷ তখন তো কেউ কিছু বলছে না!’’

ব্যবসায়ীদের মধ্যেও অধিকাংশের মুখে মাস্ক দেখা যাচ্ছে না। দোকানে স্যানিটাইজ়ার রাখছেন না প্রায় কেউই। বেশিরভাগ ব্যবসায়ীর বক্তব্য, এত গরমে দীর্ঘক্ষণ মাস্ক পরে কাজ করা সম্ভব নয়৷ বনগাঁর এক বিক্রেতা বলেন, ‘‘এক বছর পরে সামান্য বিক্রিবাটা শুরু করা গিয়েছে। এখন মাস্কের কথা কারও মাথায় নেই। তা ছাড়া, মাস্ক পরে খরিদ্দারদের সঙ্গে কথাবার্তা চালাতে অসুবিধা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন