Coronavirus

লকডাউনে অকারণ ঘোরাঘুরি, পাকড়াও বহু

এ দিন ক্যানিং থানায় ২ জন, বাসন্তী থানায় ৬ জন ও গোসাবা থানায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জয়নগর থানায় ৪ জনকে ধরা হয় শুক্রবার। এ দিন তাঁরা জামিন পেয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২০ ০৩:২৭
Share:

অসচেতন: পুলিশি ধরপাকড়ের ভয় উড়িয়ে এই ভিড় চোখে পড়ল বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

লকডাউন না মানার প্রবণতা গত কয়েক দিন ধরে বাড়ছিল জেলার নানা প্রান্তে। প্রথম দিকে পুলিশ লাঠিপেটা থেকে শুরু করে কান ধরে ওঠবোস করানোর মতো নানা দাওয়াই বেছেছিল। তাতে লোকের মনে ভয় ঢুকলেও পুলিশের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ ওঠে। মুখ্যমন্ত্রীও এ নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বার অকারণ রাস্তায় দেখলে ধরপাকড়ের আইনি পথেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। তাতে কাজ হবে বলে মনে করছেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা।

Advertisement

বারুইপুর পুলিশ জেলার এক আধিকারিক অবশ্য জানান, নিয়ম ভাঙলে গ্রেফতার করা হচ্ছে লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই। তবে এ ব্যাপারে শনিবার থেকে আলাদা তৎপরতা দেখা যায় পুলিশের। বিভিন্ন রাস্তায় নাকা চেকিং করে পুলিশ। রাস্তায় কাউকে দেখলেই তাঁকে ধরে কেন বেরিয়েছেন, জিজ্ঞাসা করা হয়। সন্তোষজনক উত্তর না মিললেই তাদের আটক করা হয়েছে। কয়েকজন গ্রেফতারও হয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে আটকে রাখা হয়েছে মোটরবাইক।

এ দিন ক্যানিং থানায় ২ জন, বাসন্তী থানায় ৬ জন ও গোসাবা থানায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জয়নগর থানায় ৪ জনকে ধরা হয় শুক্রবার। এ দিন তাঁরা জামিন পেয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, যথার্থ কারণ ছাড়া রাস্তায় বেরোনোর অপরাধেই সকলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় আটক করা হয়েছে নিয়ম না মানা ব্যবসায়ী-দোকানদারদেরও।

Advertisement

ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলাতেও গত কয়েক দিন ধরেই ধরপাকড় চলছে। পুলিশ জানায়, লকডাউন ভাঙার অভিযোগে গত কয়েক দিনে কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকা থেকে ৪৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ ডিভিশন থেকে গ্রেফতার হয়েছেন ৬০ জন। পুলিশ জানিয়েছে, আইন ভাঙায় সতর্ক করার জন্যই গ্রেফতার করা হয়। সকলের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ কর্তারা অনেকেই জানাচ্ছেন, স্রেফ আড্ডা দিতে, ঘুরতে বেরিয়ে পড়ছেন কিছু মানুষ। তাঁরা কিছুতেই লকডাউনের গুরুত্ব বুঝতে পারছেন না। তাতে সচেতন মানুষ আতঙ্কিত হচ্ছেন। মানু.জনের কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

শুক্রবার রাত থেকে বনগাঁ, বারাসত, বসিরহাট জেলা পুলিশ এলাকায় এবং ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় বেআইনি ভাবে পথে বের হওয়ায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক করা হচ্ছে যানবাহন।

বনগাঁ থানা এলাকায় কয়েক দিন ধরে সকালে বাজার এলাকার পরিবেশ দেখে বোঝার উপায় ছিল না, লকডাউন চলছে। টোটো-অটোও চলছে দেদার। চায়ের দোকান খোলা। পুলিশ এখন শহরের নিউমার্কেট এবং টবাজারে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করছে।

শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত ৪ জন টোটো চালক, ২ জন অটো চালক, তিনজন চায়ের দোকানি, তিনজন বাইক চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। চায়ের দোকানগুলি সব বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। সকলের বিরুদ্ধে আইপিসি ১৮৮ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধারাটি জামিনযোগ্য। সর্বোচ্চ শাস্তি, ৬ মাস পর্যন্ত জেল। বনগাঁর পুলিশ সুপার তরুণ হালদার বলেন, ‘‘লকডাউন উপেক্ষা করে বেআইনি ভাবে ঘোরাঘুরি, যানবাহন চালানো এবং দোকান খোলা রাখা হলে আইনগত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

বারাসত পুলিশ জেলার অন্তর্গত হাবড়া ও গোবরডাঙা থানার পুলিশও কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। হাবড়া থানার পুলিশ ধরেছে তিনজনকে। হাবড়া শহরে যশোর রোড এলাকা থেকে তাঁদের ধরা হয়েছে। আটক করা হয় টোটো এবং চা বিক্রির সরঞ্জাম। গোবরডাঙা থানার পুলিশ শনিবার মনসাতলা এলাকা থেকে লকডাউন ভেঙে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। বারাসত জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে পথে বেরোলেই আইনগত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ গ্রেফতার শুরু করেছে বসিরহাট জেলা পুলিশও। লকডাউন উপেক্ষা করে দোকান খুলে রাখার অভিযোগে ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাইক নিয়ে অকারণ ঘোরাঘুরি করায় ৬০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বসিরহাটে। একই অভিযোগে বাদুড়িয়া, হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, ন্যাজাট, হাড়োয়া, মিনাখাঁ, স্বরূপনগর এবং সুন্দরবন উপকূলবর্তী থানা এলাকা থেকে আরও শতাধিক মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিন কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, নৈহাটি এবং ইছাপুরে বেশ কয়েকজন টোটো চালককে গ্রেফতার করা হয়। বাইক নিয়ে বাইরে বেরোনো জনাকয়েক যুবককেও ধরা হয়েছে। এ দিন শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন থানায় ধৃতের সংখ্যা পঞ্চাশেরও বেশি।

ধারা-১৮৮

 কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়?

জনজীবনে বিপজ্জনক প্রভাব ফেলার মতো কাজ করলে, স্বাস্থ্য বা সুরক্ষার ক্ষেত্রে হানিকর হলে বা এমন কোনও কাজ করলে, যা থেকে সমাজে অশান্তি ছড়ানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

 শাস্তি কী?

ছ’মাস পর্যন্ত জেল অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা দুই-ই

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন