Pradhan Mantri Awas Yojana

টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরে থেকে পাকা ঘরের স্বপ্ন

সরকারি আবাস যোজনায় ঘরের টাকা পাচ্ছেন না গরিব মানুষ। যাঁরা এর আগে টাকা পেয়েছিলেন, তাঁদের অনেককে কাটমানি দিতে হয়েছিল বলে অভিযোগ। এ দিকে, ঘর না পেয়ে বিপর্যস্ত বহু পরিবার। পুজোর আলো পৌঁছয় না সে ঘরের কোণে। খোঁজ নিলেন আমাদের প্রতিবেদকেরা।  

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

গোসাবা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:২৮
Share:

গোসাবা ব্লকের বালি ১ পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সৌমিত্র সুঁই। বছর চল্লিশের সৌমিত্র স্ত্রী, দুই সন্তান ও বয়স্ক বাবা-মাকে নিয়ে টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরে কোনও মতে মাথা গুঁজে আছেন। সৌমিত্রের বাবা মঙ্গল শয্যাশায়ী। দিনমজুরি করে, অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চলে সৌমিত্রের। মাসে মেরেকেটে হাজার পাঁচেক টাকা রোজগার। লক্ষ্মীর ভান্ডারের ভাতা পান সৌমিত্রের স্ত্রী মাম্পি। এ ছাড়া, খাদ্যসাথী প্রকল্পের মাধ্যমে কিছু রেশন পান। দুই সন্তান পড়াশোনা করছে।

Advertisement

সামান্য রোজগার থেকে টাকা বাঁচিয়ে ফুটো হওয়া বদলেরও ক্ষমতা নেই সৌমিত্রের। তাই গোটা বর্ষায় কোনও মতে প্লাস্টিক টাঙিয়ে রাত-দিন কাটান সপরিবার। ভেবেছিলেন সরকারি আবাস প্রকল্পে আবেদন করলে কাজ হবে। কিন্তু বছরের পর বছর কেটে গেলেও আবাস যোজনার ঘর পাননি তিনি। সৌমিত্র বলেন, “বয়স্ক বাবা-মা, সন্তানদের নিয়ে খুবই কষ্টে থাকি। নেতারা বলেছিলেন, আবাস যোজনায় ঘর দেবেন। কিন্তু কিছুই হল না এখনও।”

সৌমিত্রের বাড়ি বলতে মাটির দেওয়াল ও বাঁশ দিয়ে নড়বড়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই। একটা ছোট বারান্দা। বর্ষায় বারান্দাতেই রান্না করেন মাম্পি। না হলে উঠোনে রান্নাবান্না সারেন। বৃষ্টিতে ঘরের মধ্যে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা। মাম্পি বলেন, “আমাদের জমি-জায়গা নেই। শ্বশুরমশাই যখন সুস্থ ছিলেন, তখন বাবা-ছেলে মিলে দিনমজুরি করতেন। কিন্তু উনি এখন অসুস্থ। তাই স্বামীর একার উপরেই সমস্ত চাপ। সংসারের খরচ, শ্বশুরের ওষুধ কিনে বাড়িঘর মেরামত করা আর সম্ভব নয়।এ ভাবেই দিন চলছে।” তিনি আরও বলেন, “শুনেছিলাম, সরকারি আবাস যোজনার তালিকায় নাম আছে আমাদের। কিন্তু এখনও তো কিছুই পেলাম না। আদৌ আসবে কি না জানি না। আয়লা, আমপান, ইয়াসের মতো ঝড় এলে কী হবে জানি না!”

Advertisement

বিডিও বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, “এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে আবাস যোজনার টাকা আসেনি। যদি ওই পরিবারের নাম তালিকায় থাকে, তা হলে নিশ্চয়ই সরকারি সাহায্য পাবেন। আর যদি তালিকায় নাম না থাকে, তা হলে ওই পরিবারের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

চারদিকে পুজো পুজো আবহাওয়া। তবে সে সব ছোঁয় না সুঁই পরিবারকে। পুজোয় নতুন জামাকাপড় কারও জন্যই কিনতে পারেননি সৌমিত্র। তবে চেষ্টা চালাচ্ছেন, আগামী কয়েক দিন বাড়তি কাজ করে যদি দুই সন্তানের জন্য কিছু কিনতে পারেন। সৌমিত্রের কথায়, “আমাদের আর পুজো! শুধু বাচ্চা দুটোকে যদি নতুন জামা কিনে দিতে পারি, তা হলেই যথেষ্ট।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন