অমিল জলাতঙ্কের প্রতি‌ষেধক

জলাতঙ্কের প্রতিষেধকের অভাব শুরু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:২১
Share:

প্রতীকী ছবি।

জলাতঙ্কের প্রতিষেধকের অভাব শুরু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়।

Advertisement

দিন কয়েক আগে বিড়াল কামড়ে দিয়েছিল বছর পাঁচেকের শ্রেয়াল পাণ্ডেকে। গাইঘাটার ফুলসরায় তার বাড়ি। মা নিরুপমা ঠাকুরনগরের চাঁদপাড়া ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে মেয়েকে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে জানানো হয়, হাসপাতালে অ্যান্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন নেই। বাইরে থেকে ৩৩৬ টাকা দিয়ে একটি ভ্যাকসিন কিনে মেয়েকে দিয়েছেন নিরুপমারা।

মঙ্গলবার সকালে নিরুপমা মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু সেখান থেকে জানানো হয়, মহকুমা হাসপাতালেও জলাতঙ্কের প্রতিষেধক নেই। নিরুপমা বলেন, ‘‘আমরা গরিব মানুষ। বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কেনার মতো অবস্থা নেই। কী করব বুঝতে পারছি না।’’

Advertisement

বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের উপরে প্রায় ১৪ লক্ষ মানুষ নির্ভরশীল। হাসপাতালের সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে অ্যান্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন নেই। রোজ ১০০-১৫০ মানুষ হাসপাতালে আসছেন কুকুরের কামড় খেয়ে। তাঁদের ফোন নম্বর দিয়ে পরে যোগাযোগ করে হাসপাতালে আসতে বলা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের কাছে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে।’’ সাধারণত কুকুর কামড়ানোর ১০ দিনের মধ্যে অ্যান্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন নিতে হয় বলে জানিয়েছেন সুপার। কিন্তু মহকুমার অন্য হাসপাতাল ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেগুলিতেও ছবিটা একই। গোপালনগর থেকে এক ব্যক্তি এসেছিলেন হাসপাতালে। তাঁকে কুকুরে কামড়েছে। হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে, পরে খোঁজ নিতে। এই পরিস্থিতিতে বেশির ভাগ মানুষ প্রয়োজনে দোকান থেকে ভ্যাকসিন কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কুকুরে কামড়ালে অ্যান্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন নেওয়াটা বাধ্যতামূলক। কারণ, এমনও দেখা যায়, কুকুর কামড়ানোর পনেরো বছর পরে জলাতঙ্ক হল।

হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালেও নেই ভ্যাকসিন। সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ভ্যাকসিন চাওয়া হয়েছে।’’ এখানেও আক্রান্তেরা এসে ফিরে যাচ্ছেন।

উত্তর ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রাঘবেশ মজুমদার বলেন,, ‘‘যে সংস্থা অ্যান্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন সরবরাহ করে, তারা চাহিদা অনুযায়ী দিতে পারছে না। সম্প্রতি ১০০ ভ্যাকসিন পাওয়া গিয়েছিল। তা হাসপাতালগুলিকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থার কাছে আরও চাওয়া হয়েছে।’’

কুকুরের কামড় খেয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন বাগদার এক যুবক। হাসপাতালে প্রতিষেধক না পেয়ে বাইরে থেকে ইঞ্জেকশন নিয়েছেন। তিনি জানালেন, যাতায়াত ও প্রতিষেধকের খরচ মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত হাজারখানেক টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, শীঘ্রই সমস্যা মিটে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন