শিক্ষকের অভাবে বন্ধ বিজ্ঞান বিভাগ

পাথরপ্রতিমার কামদেবপুর স্নেহবালা মিলন বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের উচ্চমাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছে এলাকার  ছাত্রছাত্রীরা।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

পাথরপ্রতিমা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:২১
Share:

শিক্ষক নেই। বন্ধ বিজ্ঞান বিভাগের পঠনপাঠন।

Advertisement

পাথরপ্রতিমার কামদেবপুর স্নেহবালা মিলন বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের উচ্চমাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছে এলাকার ছাত্রছাত্রীরা।

পাথরপ্রতিমা ব্লকের অচিন্ত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে কামদেবপুর স্নেহবালা মিলন বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলটি ২০১১ সালে উচ্চমাধ্যমিকে উন্নীত হয়। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে বাংলা ও বিজ্ঞান বিভাগ ওই বছরেই চালু হয়। বিজ্ঞানের বিষয় ছিল জীববিদ্যা, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা ও গণিত। ওই স্কুল থেকে ফি বছর প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ জন ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। ওই স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ চালু হওয়ার পর অনেক ছাত্রছাত্রীই বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হত। পাশাপাশি এলাকার আরও তিনটি হাইস্কুলের কিছু ছাত্রছাত্রী বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে আসত। উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ চালু হওয়ার পর বছর দু’য়েক উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল ফলও করে স্কুলটি। ২০১৪ সালে বিজ্ঞান বিভাগের জীববিদ্যা ও রসায়নের দুই শিক্ষক বদলি হয়। আর নতুন করে ওই দুই বিষয়ের কোনও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। সে জন্য ওই বিভাগ বন্ধ করে দিতে হয়েছে।

Advertisement

বিজ্ঞান বিভাগ অনুমোদনের পর দু’টি বড় ল্যাবরেটরি তৈরি করা হয়েছিল। তাতে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস হত। কিন্তু প্রায় চার বছর ধরে ওই ক্লাস না হওয়ায় সরঞ্জামে ধুলো পড়ে গিয়েছে। সেগুলি নষ্ট হচ্ছে।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৬১ সালে স্কুলটি চালু হয়। ওই স্কুলের বর্তমান ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৬০৭ জন। সেখানে স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন ১৮ জন, পার্শ্বশিক্ষক ৬ জন। কিন্তু তাতে সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে আরও ২৪ জন অস্থায়ী

শিক্ষক রাখতে হয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক পদ রয়েছে ৭টি। তার মধ্যে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৪ জন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরুণকুমার মাইতি বলেন, ‘‘এই এলাকায় আমার স্কুলে মাধ্যমিকে ছাত্রছাত্রীরা ভাল ফল করে। তাদের অনেকেই বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়। কিন্তু স্কুলে শিক্ষক না থাকায় তা চালু হয়েও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনেকেই টাকার অভাবে দূরের স্কুলে যেতে পারছে না। ফলে তারা কলা বিভাগে ভর্তি হচ্ছে।’’

ওই স্কুল থেকে ২০১৭ সালে মাধ্যমিক পাশ করে প্রবাল প্রধান। এই স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাকে জয়নগরের নিমপীঠ রামকৃষ্ণমিশনে ভর্তি হতে হয়। যা তার বাড়ির থেকে বেশ কিছুটা দূরে। বাধ্য হয়ে ছাত্র আবাসনে থেকে

তাকে পড়াশোনা করতে হচ্ছে। ওই ছাত্রের কথায়, ‘‘পাড়ার ভাল স্কুল ও নিজের বাড়ির পরিবেশ ফেলে

দূরের স্কুলে গিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে হচ্ছে।’’

ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি সুনীলকুমার আদক বলেন, ‘‘বিজ্ঞান বিভাগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এলাকার কৃতী ছেলেমেয়েদের দূরের স্কুলে পড়তে যেতে হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ করা হোক। পাশাপাশি স্কুলে ঢোকার অ্যাপ্রোচ রাস্তাটি পাকা করা প্রয়োজন। সাইকেল রাখার শেড দরকার।’’

জেলা স্কুল পরিদর্শক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি জেলার বিভিন্ন স্কুলের সমস্যার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। আর ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন