বহু মানুষের প্রত্যাশা এই মেশিন নিয়েই। । নিজস্ব চিত্র।
শহরের চাঁপাবেড়িয়া এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধা প্রভাবতী চক্রবর্তী সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসকেরা জানান, দ্রুত সিটি স্ক্যান করাতে হবে। মহকুমা হাসপাতালে সিটি স্ক্যান মেশিন নেই। তা হলে উপায়? প্রভাবতীদেবীর পরিবার অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে তাঁকে নিয়ে যান বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে। সেখান প্রায় দেড় হাজার টাকা দিয়ে সিটি স্ক্যান করান।
শুধু প্রভাবতীদেবীই নন, বনগাঁ মহকুমার মানুষের কাছে সিটি স্ক্যান করানোর জন্য এত দিন পর্যন্ত সরকারি কোনও ব্যবস্থা ছিল না। রোগীকে মোটা টাকায় অ্যাম্বুল্যান্স, গাড়ি ভাড়া করে নদিয়ার রানাঘাটে, বারাসতে বা কলকাতায় নিয়ে যেতে হতো।
এত দিনে অবশ্য সেই চাহিদা মিটল। বনগাঁ পুরসভার পক্ষ থেকে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র ‘স্বাস্থ্যদ্বীপ’-এ শুক্রবার বসানো হয়েছে আধুনিক সিটি স্ক্যান মেশিন। এ দিন দুপুরে ওই পরিষেবার উদ্বোধন করেন জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য। পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই সিটি স্ক্যান মেশিন বসানো হয়েছে।’’ পুরপ্রধান জানান, যে পরীক্ষা করতে বাইরে ১৫০০ টাকা লাগে, তা এখানে করা হবে মাত্র ৭০০ টাকায়। ক্ষেত্র বিশেষে আরও ছাড় দেওয়া হবে।
বনগাঁ থেকে রানাঘাটের দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার। বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কোনও রোগীর সিটি স্ক্যান করাতে হলে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে যদি রানাঘাটে যেতে হয়, তা হলে খরচ ১২২০ টাকা। পাশাপশি সেখানে সিটি স্ক্যান করাতে খরচ প্রায় দেড় হাজার। এখন থেকে ওই খরচ আর করতে হবে না।
বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক গোপাল পোদ্দার বলেন,ম ‘‘সিটি স্ক্যান মেশিনের অভাবে হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসা শুরু করতেও দেরি হয় অনেক সময়ে। কারণ, বাইরে থেকে করিয়ে আনতে সময় লেগে যায় অনেকের ক্ষেত্রে। এ বার থেকে আর ওই অসুবিধা থাকল না।’’এ দিনের অনু্ষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। তিনি জানান, বনগাঁর মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হল।